Tuesday , September 17 2024
Breaking News
Home / Countrywide / এবার ত্যাগী নেতাদের নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিল বিএনপি

এবার ত্যাগী নেতাদের নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিল বিএনপি

একতরফা দাবিতে চলমান আন্দোলনে ত্যাগী নেতাকর্মীদের যথাযথ সম্মান দেবে বিএনপি। রমজানে মুক্তিপ্রাপ্ত নেতাকর্মীদের নিয়ে ইফতারের আয়োজন করা হবে। ১০টি সাংগঠনিক বিভাগে এই ইফতার অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি দেবে দলটি। সোমবার দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া মাঠপর্যায়ে কোনো কর্মসূচি দেওয়া যায় কি না তা নিয়েও আলোচনা করেন নেতারা। জনস্বার্থে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার কথা জানিয়েছেন তারা। তবে কী কর্মসূচি নেওয়া হবে তা চূড়ান্ত হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, এ বছর রমজানে এতিম, আলেম, কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ ও পেশাজীবীদের সম্মানে কেন্দ্রীয়ভাবে ইফতার পার্টির আয়োজন করবে বিএনপি। এছাড়া সারাদেশের সকল সাংগঠনিক জেলা ও ইউনিটে ইফতার মাহফিল আয়োজনের নির্দেশনা দেওয়া হবে। সহযোগী সংগঠনগুলোও কেন্দ্রীয়ভাবে ইফতারের আয়োজন করবে।

কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে ২৭ হাজার ৫২৬ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে ২৮ অক্টোবর থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশ থেকে ২৫ হাজার ৫৪৪ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপির। মহাসমাবেশ পণ্ডের পর স্থায়ী কমিটির দুই সদস্যসহ ওই দিন থেকে ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরদিন পর্যন্ত বিএনপি হরতাল, অবরোধ, অসহযোগ ও গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করে। তবে অধিকাংশ নেতাকর্মী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। কারাগারে এখন ১৫ কেন্দ্রীয় নেতাসহ প্রায় দেড় হাজার নেতাকর্মী।

সোমবার রাতে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সাড়ে তিন মাস পর এতে অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সভায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তাদের ত্যাগের জন্য ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে আন্দোলনে যারা ভূমিকা রেখেছেন তাদের প্রশংসা করেন তিনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সদ্য মুক্তি পাওয়া বিএনপির মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির দুই সদস্যকে বৈঠকে যোগ দিতে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। তারা তাদের অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন। আমাদের অনেক নেতাকর্মী কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন, আরও অনেক নেতাকর্মী মুক্তি পাবে। আমরা দেখব কি করা যায়।

সূত্র আরও জানায়, বৈঠকে নেতারা বলেন, কারাগারে থাকা অধিকাংশ নেতাকর্মী ছিলেন পদ-পদবিহীন। নেতাদের উপলব্ধি, মাঠে নেতাকর্মীদের পরিকল্পিত গ্রেপ্তার। তাদের সম্মান করলে দল উপকৃত হবে। নেতাকর্মীরাও উজ্জীবিত হবেন। স্থায়ী কমিটির সকল নেতারা মতামত দেওয়ার পর মুক্তি পাওয়া নেতাকর্মীদের নিয়ে ১০টি সাংগঠনিক বিভাগে ১০টি করে ইফতার করার সিদ্ধান্ত হয়। সেখানে সিনিয়র নেতারা অংশ নেবেন। বৈঠকে গ্রেফতারকৃত নেতাদের দায়িত্ব নিয়ে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী নেতাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। সিদ্ধান্ত নিলে চিঠির মাধ্যমে তাদের ধন্যবাদ জানানো হবে।

ভারপ্রাপ্ত নেতাদের অবদানের স্বীকৃতি ও ধন্যবাদ জানিয়ে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হবে বলে অফিস সূত্রে জানা গেছে।

বেশ কয়েকজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, এটি একটি ভালো উদ্যোগ। বাস্তবতা হলো গ্রেফতারকৃত প্রায় সকল নেতাকর্মীই মাঠে সক্রিয় ছিলেন। তবে তাদের বেশির ভাগই তৃণমূল নেতাকর্মী, যাদের কোনো পদ-পদবি নেই। ভবিষ্যতে পদমর্যাদার ভিত্তিতে তাদের সম্মানের পাশাপাশি মূল্যায়ন করা উচিত। এতে করে নেতাকর্মীরা রাজপথে কর্মসূচি সফল করতে আরও উৎসাহ পাবে।

এরই মধ্যে অন্তত ১৬ জন কেন্দ্রীয় নেতা কারাগার থেকে ছাড়া পেয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সরোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নির্বাহী কমিটির শেখ রবিউল আলম রাবি, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান খোকন, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্নাসহ অনেক নেতাকর্মী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। কারাগারে থাকা সিনিয়র নেতাদের মধ্যে রয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল আলম, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহিরুদ্দিন স্বপনসহ অন্তত ১৫ কেন্দ্রীয় নেতা। এদের মধ্যে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ইতিমধ্যে সবকটি মামলায় জামিন পেয়েছেন। জামিনে তিনি কারাগারে পৌঁছালে যে কোনো সময় তাকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

About Babu

Check Also

হাসিনার ভাগ্য নির্ধারণের আর পাঁচ দিন, বিপাকে ভারত

আগামী ২০ সেপ্টেম্বর শেষ হতে চলেছে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ। বর্তমানে, কূটনৈতিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *