Monday , January 6 2025
Breaking News
Home / Countrywide / এবার তেল কিনে বিপাকে বিপিসি

এবার তেল কিনে বিপাকে বিপিসি

জ্বালানি তেল আনতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (পিডিবি) বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বিপিসি থেকে ফার্নেস অয়েল নেয়। কিন্তু এই প্রান্তিকে (অক্টোবর-নভেম্বর-ডিসেম্বর) বিপিসি তেল আমদানি করলেও পিডিবি নেয় না। তেল সাশ্রয়ের পাশাপাশি দাম দিতেও বিপাকে পড়েছে বিপিসি।

সাধারণত, বিপিসি বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৪৩০০০ থেকে ৪৩,৫০০ মিলিয়ন মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল আমদানি করে। এই প্রান্তিকে প্রায় ১৭ মিলিয়ন মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল আমদানি করা হয়েছে। যার পুরোটাই সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আমদানি করা হয়েছে।

গ্রীষ্মকালে ১৬,০০০ থেকে ১৭,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এখন বিদ্যুতের চাহিদা দিনে ৯ হাজার মেগাওয়াট এবং রাতে ৮-৯ হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে, যাতে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাতে হয় না। এমনকি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনও কমে গেছে।

এছাড়া দেশের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও পূর্ণ ক্ষমতায় পরিচালিত হচ্ছে না। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি ৩,০০০ থেকে ৩,৫০০ মেগাওয়াট লোডে চলছে, যেখানে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি ৬,৫০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত উত্পাদন করতে পারে।

এদিকে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা ৮ হাজার মেগাওয়াটের ওপরে। কিন্তু সেখানে উৎপাদন হচ্ছে চার হাজার মেগাওয়াট।

সম্প্রতি জ্বালানি বিভাগে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিপিসির পরিচালক (বিপণন) অনুপম বড়ুয়া বলেন, তেল আমদানি করে বিপিসি সমস্যায় পড়েছে। বারবার অনুরোধ করেও পিডিবি তেল নিতে রাজি হচ্ছে না। বৈঠকে জ্বালানি সচিব নুরুল আলম তেল নিতে পিডিবিকে চিঠি দেওয়ার নির্দেশ দেন।

জানতে চাইলে বিপিসির একজন কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র নিজেদের জন্য ফার্নেস অয়েল আমদানি করলেও আমরা সব ফার্নেস অয়েল পিডিবিতে সরবরাহ করি। সেজন্য পিডিবি প্রতি তিন মাস পর পর আমাদের তেলের চাহিদা দেয়। এই সময় কোন পার্থক্য ছিল না। তারা এবার আমাদের যে চাহিদা দিয়েছে তার ভিত্তিতে আমরা তেল আমদানি করেছি। এতে বিপিসির বিপুল পরিমাণ অর্থ আটকে আছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিডিবির এক কর্মকর্তা জানান, শীত মৌসুমে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চাহিদা না থাকলেও আসন্ন সেচ মৌসুমে চাহিদা বাড়ে। তখন তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানির চাহিদা বেড়ে যায়। তখন আমাদের তেলের চাহিদাও বাড়বে।

প্রসঙ্গত, ২৮ ডিসেম্বর, বিদ্যুৎ ভবনে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় পর্যালোচনা সভায় জানানো হয়েছিল যে আগামী ২০২৪ সালের সেচ মৌসুমে বিদ্যুতের সামগ্রিক চাহিদা ১৭,৮০০ মেগাওয়াট হতে পারে। গত সেচ মৌসুমের এপ্রিলে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৬ হাজার মেগাওয়াট। সে হিসাবে চাহিদা বেড়েছে ১ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট।

এই চাহিদা মেটাতে গ্যাসের চাহিদা ১ হাজার ৭৬০ মিলিয়ন ঘনফুট, ফার্নেস অয়েলের চাহিদা ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন এবং ডিজেলের চাহিদা ১৫ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। সভায় জানানো হয়, সেচ মৌসুমে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে গ্যাস, ফার্নেস অয়েল ও ডিজেলের সরবরাহ বাড়ানো প্রয়োজন।

জ্বালানি বিভাগ জানায়, ফার্নেস অয়েল ও ডিজেলের কোনো ঘাটতি নেই এবং চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা হবে।

About Babu

Check Also

খালেদা জিয়ার সঙ্গে আসিফ নজরুলের একান্ত আলাপ: সাবেক প্রধানমন্ত্রী যা বললেন উপদেষ্টাকে

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে গত নভেম্বরে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *