হঠাৎ করেই অবসরে পাঠিয়ে দেয়া হলো তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব মো. মকবুল হোসেনকে। তবে হঠাৎ করে কেন তাকে অবসরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করেনি মন্ত্রণালয় সূত্র। এদিকে সচিব মকবুল হোসেন তাকে অবসর দেয়ার বিষয়ে বলেন, আমি জানিনা আমার কোন ভুল ধরতে পেরেছে সরকার। আমি সরকার বিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট নই এবং আমার কোন এই ধরনের কোনো কিছুর সাথে যোগসূত্রও নেই। এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ তেমন কিছু বলেননি। সবকিছু মিলে তাকে অবসরে পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি জানান, মার্চ মাসে তিনি লন্ডনে গিয়েছিলেন। সেখানে একটি টিম নিয়ে গিয়েছিলাম। যারা ছিলেন তাদের জিজ্ঞাসা করতে পারেন। তারেক রহমানকে কখনো সরাসরি দেখেছি বলে মনে পড়ে না। আমি তার সাথে দেখা করতেও চাই না। আমার অপরাধ কি জানি না, অপরাধ করলে কারণ জানার অধিকার আছে। রাষ্ট্রের কোনো কারণ থাকতে পারে কিনা আমি জানি না।
সরকারের দেওয়া আদেশ তিনি আনন্দের সঙ্গে মেনে নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী অবসর দেওয়া হয়েছে। এখানে যতদিন কাজ করেছি, ততদিন সততার সঙ্গে কাজ করেছি। আমি পারিবারিকভাবে বর্তমান সরকারের আদর্শের। সে অনুযায়ী সরকারকে সহায়তা করেছি। অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আপনারা এটি পরীক্ষা করতে পারেন।
তিনি বলেন, আমাকে অবসরে পাঠানোর কারণ আমি জানি না। তবে সরকার যেকোনো সময় যে কাউকে অবসর দিতে পারে। তিনি বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তার একটা পরিকল্পনা আছে। আমরা যারা ধর্মে বিশ্বাস করি, ইসলামে বিশ্বাস করি, তারা মানি- আমার হয়তো এই পর্যন্তই প্ল্যানিং ছিল। এই পর্যন্তই রিযিক ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যেক মানুষের নিজের চেয়ে বড় বিচারক নেই। তাই সেই বিচারে দাঁড়াতে আমি সর্বদা প্রস্তুত।
মকবুল হোসেন আরও বলেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি বলেন, আমি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলাম। আমরা যেভাবে স্রষ্টাকে স্মরণ করি, বঙ্গবন্ধুকেও সেইভাবে স্মরণ করি।
বিদায়ী তথ্যসচিব আরও বলেন, মন্ত্রীর সঙ্গে কোনো ফাঁক নেই। মন্ত্রণালয়ের কাজে মতবিরোধ হতে পারে। কিন্তু কাজের কোনো প্রভাব পড়েনি। জীবনে কখনো নৈতিকতার সাথে আপস করিনি। যতদিন বেঁচে থাকবো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় থাকবো। বিএনপির পল্টন কার্যালয়কেও আমি ভালোভাবে চিনি না। বলা হচ্ছে তাদের অফিসের সামনের অফিসে যেতাম, এটা মিথ্যা।
প্রসঙ্গত, রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য সচিব মো. মকবুল হোসেনকে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। জানা গেছে, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেনকে ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’ এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে তাকে অনেকটা হঠাৎ করেই অবসরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে এবং অবিলম্বে তার প্রতি সরকারী আদেশ কার্যকর করা হবে। উল্লেখ্য, আগামী বছরের শেষদিকে তার চাকরির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাকে বছর খানেক আগেই অবসরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এদিকে মকবুল হোসেন অবসরে পাঠানোর বিষয়ে পরবর্তীতে কোন পদক্ষেপ নিবেন কিনা সে বিষয়ে কিছু জানাননি।