স্বপ্নের পদ্মা সেতু নিয়ে নানা ষড়যন্ত্রের অভিযোগে সম্প্রতি গত কয়েকদিন আগেই দেশের প্রায় প্রতিটি সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামে আসেন নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আর এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার আলোচনায় এলেন তিনি। জানা গেছে, এবার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের লেখা বই কিনে রীতিমতো বিপাকে পড়েছে সংসদ।
বইটি নিয়ে চলে বেশ লুকোচুরি। একবার বইটি সংসদ সচিবালয়ের গ্রন্থাগার কক্ষের শেলফে রাখা হয়। কখনো কখনো কোনো কর্মকর্তার কক্ষের শেলফেও বইটি জায়গা পেয়েছে রা। আবার কখনও বইটি একটি শেলফে রাখা হয়, তবে উল্টো করে, যাতে বইটির নাম দেখা যায় না। তবে গতকাল থেকে বইটি আর পাওয়া যাচ্ছে না।
সর্বশেষ লাইব্রেরির যে কর্মকর্তার শেলফে বইটি উল্টো করে রাখা ছিল সেখান থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এভাবে গত দুই মাসে ১৫ থেকে ২০ বার বইটির অবস্থান পরিবর্তন করা হয়েছে। অনুসন্ধান করে জানা যায়, গত মে ও জুন দুই দফায় সংসদ সচিবালয় চার শতাধিক বই কিনেছে। বইগুলো কেনা হয় পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেডের মাধ্যমে।
এতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের লেখা-এ ওয়ার্ড অফ থ্রি জিরোস: দ্য নিউ ইকোনমিকস অফ জিরো প্রভার্টি, জিরো আনইমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড জিরো নেট কার্বন ইমিশনস বইটি তালিকাভুক্ত ছিল। আদেশ অনুযায়ী, গত ৫ জুলাই বইটির দুই কপি সংসদ সচিবালয়ের গ্রন্থাগারে সরবরাহ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বইয়ের দাম দেওয়া হয়। এরপর ইউনূসের লেখা বই নিয়ে টানাহেঁচড়া শুরু হয়। সংসদ সচিবালয়ের বই নিয়ে গঠিত যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্যরা প্রথম বই নিয়ে আপত্তি জানান।
তারা জানান, বইটিতে সরকারবিরোধী বিভিন্ন লেখা ও মন্তব্য রয়েছে। তাই এই বই কেনা ঠিক নয়। সংশ্লিষ্টরা কোনোভাবে এ বইয়ের বিষয়ে জানতে পারলে লাইব্রেরির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের জবাবদিহি করা হতে পারে। যাচাই-বাছাই কমিটির এমন মন্তব্যের পর গ্রন্থাগারে কর্মরত কর্মকর্তারা বই নিয়ে কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। কারণ বইটির নাম চূড়ান্ত তালিকায় ছিল এবং কেনার পর মূল্য পরিশোধ করা হয়েছিল। তাই বইয়ের অবস্থান প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হয়। গুটিকয়েক সংসদ সদস্য সংসদ সচিবালয়ের লাইব্রেরি কক্ষে চলে যান। প্রথমে বইটি লাইব্রেরির শেলফে রাখা হলেও পরে তা সরিয়ে ফেলা হয়। লাইব্রেরিতে আসা কোনো সাংসদ যাতে বই না পড়েন সেজন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরে উপ-পরিচালক (গ্রন্থাগার) জেব উন নেছার অফিস কক্ষে রাখা হয়।
কিন্তু সেখানে বইটি উল্টে রাখা হয়েছে যাতে কেউ খেয়াল না করে। গতকাল সেখান থেকে বইটিও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ওবায়দুর রহমান বলেন, ম্প্রতি কিছু বই কেনা হয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কোনো বই ছিল কিনা তা এই মুহূর্তে মনে করতে পারছি না। তিনিও আপত্তি জানানোর বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, এমন কোনো ঘটনা আমার মনে নেই।
তবে এবিষয়ে বিস্তারিত জানতে উপ-পরিচালক (গ্রন্থাগার) জেব উন নেছার মুঠো একাধিকবার কল দেয়া হলেও, তিনি ফোনটি রিসিফ করেননি। ফলে এব্যাপারে তার কাছ থেকে কোনো তথ্যই জানা সম্ভব হয়নি।