আমাগী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে বদ্ধপরিকর নির্বাচন কমিশিন। তার ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করছে নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দল ও সুশিল সমাজের সাথে বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন। বৈঠকে নির্বাচন বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে আলোচনা করেন তারা। পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ডিসি ও এসপিদের সাথে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন।
১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় জেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শনিবার (৮ অক্টোবর) জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) সঙ্গে বৈঠকে ক্ষোভের মু/খে পড়েন এক নির্বাচন কমিশনার।
নির্বাচন কমিশনার আনিসুর রহমান তার বক্তৃতায় “নির্বাচনী শুল্ক” সম্মানী, তেলের ব্যবহার এবং অন্যান্য বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং সময়মতো অর্থ প্রদানের দাবির প্রতিক্রিয়ায় ডিসি এবং এসপিদের কটাক্ষ করলে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়।
বৈঠকে ৬৪ জেলার সকল ডিসি ও এসপি উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি জানতে রোববার দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম
একাধিক ডিসি, এসপি ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে।
এদিন তার বক্তব্যে কমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তার মধ্যে সমান বণ্টনের পরিবর্তে ডিসি ও এসপিরা নির্বাচনী দায়িত্ব সংক্রান্ত সম্মানী ও অন্যান্য বরাদ্দ থেকে কমিশন ভোগ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচন এবং গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনের আগে স্বাভাবিক নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় ডিসি ও এসপিদের ‘অদক্ষ’ ও ‘দন্তহীন’ বলেছেন নির্বাচন কমিশনার।
এ সময় সকল ডিসি ও এসপিরা চিৎকার করে হাত তুলে প্রতিবাদ জানান।
কিন্তু আনিসুর রহমান তার বক্তব্য অব্যাহত রাখেন। তিনি অভিযোগ করেন, অনেক ডিসি ও এসপি সরকারি দলের এমপি ও স্থানীয় গু/ন্ডাদের সঙ্গে যোগসাজশে কাজ করছেন। এর আগে বিভিন্ন নির্বাচনে দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ ও অবহেলার জন্যও তিনি তাদের সমালোচনা করেন।
তাদের বিরুদ্ধে ওঠা ভিত্তিহীন অভিযোগ বন্ধ না হলে একাধিক ডিসি ও এসপি সভা থেকে বেরিয়ে যাও/য়ার হু/মকি দিলে পাঁচ থেকে ছয় মিনিট পর তিনি বক্তব্য শেষ করতে বাধ্য হন।
যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম বিভাগের একজন জেলা প্রশাসক ঢাকা দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম বলেন, “ইসির সঙ্গে বৈঠক আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক ছিল না। একজন নির্বাচন কমিশনার কথিত অব্যবস্থাপনার জন্য সব ডিসি এবং এসপিকে দায়ী করেছেন।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, “সকল ডিসি এবং এসপি একসাথে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, কারণ আমাদের সাধারণীকরণ করা যায় না … তিনি একটি নির্দিষ্ট ইস্যু বা একটি জেলার দিকে ইঙ্গিত না করে আমাদের সবাইকে দোষ দিতে পারেন না।
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার হোসেন ও অতিরিক্ত আইজিপি আতিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
‘নির্বাচনে ইসির অধীনে কাজ করবে পুলিশ’
বৈঠক শেষে সিইসি ডিসি ও এসপিদের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে রাজনৈতিক মতাদর্শ ভুলে গিয়ে কাজ করা কথা উ/ল্লেখ করেন বলেন, আপনারা সর/কারি কর্মচারী।
তিনি আরও বলেন, “আপনাকে আপনার অবস্থানে নিরপেক্ষ হতে হবে। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী আপনার দায়িত্ব পালন করতে হবে। এটাই জনগণের প্রত্যাশা। আপনাকে সব নিয়ম-কানুন প্রয়োগ করে জনগণের প্রত্যা/শা পূরণ করে আস্থা অর্জন কর/তে হবে।”
অতিরিক্ত আইজিপি আতিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের সময় পুলিশ কর্মকর্তারা ইসির অধীনে কাজ করেন।
তিনি বলেন, “ইসির নির্দেশে পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করে। কারও বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বৈঠকে কর্মকর্তারা প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে বুথের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য ইসিকে অনুরোধ করেন। পরে সিইসি আউয়াল কর্মকর্তাদের আশ্বস্ত করেন যে প্রস্তাবটি ইসি বিবেচনা করবে।
সিনিয়র সচিব আখতার হোসেন জানান, বৈঠকে আসন্ন সাধারণ নির্বাচন ও আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
তিনি বলেন, “পরের বার কীভাবে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করা যায় সে বিষয়েও আমরা আলোচনা করেছি এবং পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের পরামর্শ দিয়েছেন। তারা তাদের অভিজ্ঞতার কথাও বলেছে।”
প্রসঙ্গত, ঢালাও ভাবে ডিসি ও এসপিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন নির্বাচন কমিশনের ওপর। বিষয়টি কর্মকর্তারা তাদের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেন সভা চলাকালে।