ডিমের বাজারে স্বস্তি আনতে রাজধানীতে বিক্রি হচ্ছে ডিম। এক্ষেত্রে ক্রেতারা সরাসরি সাদা ডিম ১১ টাকা (১৩২ টাকা ডজন) এবং লাল ডিম ১১ টাকা ৫০ পয়সা (১৩৮ টাকা ডজন) দিয়ে সংগ্রহ করতে পারবেন।
মূলত জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) উদ্যোগে ট্রাকসেলে সরাসরি ভোক্তা পর্যায়ে এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিদিন রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট, হাতিরপুল বাজার, নিউমার্কেট কাঁচা বাজার, রামপুরা বাজার, মালিবাগ বাজারসহ ২০টি পয়েন্টে মিনি ট্রাকে করে ডিম নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এতে ক্রেতারা ন্যায্যমূল্যে সরাসরি প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা ডিম পাচ্ছেন। আর এই তৎপরতার ফলে ইতিমধ্যেই বেড়ে ওঠা ডিমের দাম কমেছে বলে দাবি তাদের।
সোমবার (৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর হাতিরপুল বাজার ও আশপাশের খুচরা দোকানে প্রতি পিস ১২ টাকা অর্থাৎ ৪৮ টাকা হালি (১৪৪ টাকা ডজন) এবং কিছু দোকানে ১১ টাকা দরে ডিম বিক্রি করতে দেখা যায়। ৬৬ পয়সা এক পিস অর্থাৎ ৪৭ টাকা হালি। ট্রাকে ডিম বিক্রি শুরু হওয়ার পর একই বিক্রেতারা ১১ টাকা ২৫ পয়সা অর্থাৎ ৪৫ টাকা হালি দরে ডিম বিক্রি শুরু করেন।
হাতিরপুল কাঁচাবাজারের ডিম বিক্রেতা মঈনুদ্দিন জানান, আমরা একই দামে ডিম বিক্রি করছি। আসলে শীতকালে ডিমের দাম কম থাকে। গরমে ডিম নষ্ট হয়ে যায়, তাই ডিমের পরিমাণ কম, তাই বাজারে দামও বেশি। আর শীতে ডিম নষ্ট না হয় তাই বাজারে প্রচুর ডিম পাওয়া যায়। যে কারণে এর দামও কমছে।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার, যিনি ট্রাকসেলের কার্যক্রম তদারকি করেন, বলেন, আমরা বহুজাতিক কোম্পানির ডিম বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে সক্ষম হয়েছি।
জাতীয় ভোক্তা সুরক্ষা অধিদপ্তর আমাদের সাথে সহযোগিতা করেছে। এই মুহুর্তে, ভোক্তা পর্যায়ে ডিমের দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে এবং আমাদের সরাসরি ট্রাকসেলে ডিম বিক্রি এই ক্রমবর্ধমান ডিমের বাজারকে হ্রাস করেছে। আমরা ভোক্তা পর্যায়ে কম দামে অফার করছি।
আবার দোকানিরা চাইলেও আমাদের কাছ থেকে কম দামে কিনতে পারেন। আমরা পাইকারি লাল ডিম ১০ টাকা ৫০ পয়সা এবং সাদা ডিম ১০ টাকায় দোকানদারদের জন্য দিচ্ছি।
তিনি দাবি করেন, এখনও বহুজাতিক কোম্পানি ও কিছু মুনাফাখোর ব্যক্তি কখনো কখনো সিন্ডিকেট করে ডিমের বাজার কারসাজি করছে। তারা ডিমের দাম বাড়ায় আবার কমিয়ে দেয়।
সমস্যা সমাধানে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রান্তিক কৃষকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে ব্যবস্থা করতে হবে। আবার ভোক্তারা বিপাকে নেই। ট্রাকসেলের কার্যক্রম আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সাধারণ ক্রেতারাও ভোক্তা পর্যায়ে এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। সকালে ট্রাক বিক্রি শুরু হওয়ার পর ক্রেতাদের ডিম কিনতে দেখা যায়।
ওবায়দুর রহমান নামের এক ক্রেতা বলেন, বাংলাদেশের বাজারদর বোঝা খুবই কঠিন। কিছুদিন আগেও ভেতরে ডিম বিক্রি হচ্ছিল ১২ টাকা দরে। এখন দেখছি কম দামে বিক্রি হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের কার্যক্রম সরাসরি ভোক্তা পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা গেলে সব কিছুর সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব। বিষয়টি নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের উদ্যোগ বাড়ানো প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।