কণ্ঠশিল্পী এস আই টুটুল ও অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদকে শোবিজে আদর্শ ও সুখী দম্পতি হিসেবে বিবেচনা করা হতো। তানিয়া ১৯৯৯ সালের ১৯ জুলাই সঙ্গীতশিল্পী এস আই টুটুলকে বিয়ে করেন। ঠিক ২৩ বছর পর তাদের বিচ্ছেদের খবর প্রকাশ্যে আসে। ১৮ জুলাই এসআই টুটুলের দ্বিতীয় বিয়ের খবর প্রকাশিত হয়েছে। জানা গেছে, এসআই টুটুল বিয়ে করেন আমেরিকা প্রবাসী শারমিনা সিরাজ সোনিয়াকে। বর্তমানে তার সঙ্গে নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন এই গায়ক।
জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী এস আই টুটুল বিয়ে করেছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী উপস্থাপিকা শারমিন সিরাজ সোনিয়াকে। সেখানে গত ৪ জুলাই আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসে তাদের বিয়ে হয়। জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদের সঙ্গে বিয়ের ২৩ বছর পর চুকি টুটুলের বিয়ে নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। এদিকে এসআই টুটুলের দ্বিতীয় স্ত্রী সোনিয়া টুটুলের সঙ্গে প্রেম ও বিয়ের বিস্তারিত জানান। তিনি বলেন, টুটুল ডানা ভাঙা পাখির মতো আমার কাছে এসেছে। মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) সকালে দেশের একটি জনপ্রিয় গণমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে পুরো যাত্রার গল্প শোনান তিনি।
শারমিন সিরাজ সোনিয়া বলেন, এসআই টুটুলকে বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী হিসেবে আগে থেকেই চিনতাম। আমেরিকায় আমরা কয়েকবার দেখা করেছি। কিন্তু সেই অর্থে কোনো পরিচয় ছিল না। দেখা হলে শুধু তাকে সালাম দিতাম, এটুকুই। সে আমার ফেস// বুকেও ছিল না। গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্রে আরটিভির রিয়েলিটি শো ‘বাংলার গায়েন’ আয়োজন করা হয়। যেখানে বিচারক হিসেবে ছিলেন এসআই টুটুল, ইমন সাহা ও শওকত আলী ইমন। আমি সেই ব্যবস্থা উপস্থাপন করছি। আর সেই মঞ্চেই দুজনে একে অপরকে ভালো করে চিনে ফেলেন। আমরা সেখানে বেশ কিছু দিন শুটিং করি, আমরা সবাই অনেক দুষ্টুমি করি এবং মজা করি।
তিনি জানান, গত বছরের শেষ দিকে তার (টুটুল) বিবাহবিচ্ছেদ হয়। ফলে এ সময় তিনি খুবই একাকী ছিলেন। ভেতরে ভেতরে জ্বলছিল সে। এরই মধ্যে একদিন তিনি আমাকে বললেন, কত দিন পৃথিবীতে থাকব, তুমি কি আমার হাত ধরে আমার সঙ্গে থাকবে? শুরুতে সিরিয়াসলি নিইনি। আমি ভেবেছিলাম তিনি মজা করছেন। তারপর ফোনে কথা বলা শুরু করলো। তার নির্জন জীবন আমাকে নাড়া দিয়েছে। আমি একজন ব্যক্তি হিসাবে তার চিন্তা সবচেয়ে ভাল পছন্দ. তিনি অনেক দিন ধরে ধ্যানে থাকায় তার ধ্যানে অনেক পরিবর্তন এসেছে। আমি তার সম্পর্কে সবকিছু পছন্দ. তার জন্য কঠিন ছিল, মায়া জন্মেছে।
টুটুলের স্ত্রী সোনিয়ার মতে, আমেরিকাতে আমার ব্যস্ত জীবনের কারণে প্রেম-ডেট করা আমার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ে। আমি একটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের শুভেচ্ছাদূত, তার উপরে একজন একক মা এবং একটি ব্যস্ত সময়সূচী। সে সব করার সময় নেই। আমি তাকে বললাম, আপনি যদি একটি পরিবার শুরু করতে চান, তাহলে আমরা এটি সম্পর্কে কথা বলতে পারি, আমরা একে অপরকে বুঝতে পারি। তারপর আমরা দেখা করি, একে অপরকে আরও গভীরভাবে জানি। সে আর আমি দুই বোন আমেরিকায় আছে, তাদের সাথে কথা বলি, পরিবারকে বলি। সব কিছু জানার পর আমরা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিই। গত ৪ঠা জুলাই আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসে আমরা বাংলাদেশি রীতিতে বিয়ে করেছি। আমি কয়েক মাস পর একটি বড় অনুষ্ঠান আয়োজন করে সবাইকে সুসংবাদ দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তার আগেই সবাই জানত।
শারমিন সিরাজ সোনিয়া বলেন, ডিভোর্সের পর টুটুল তার ইচ্ছে মতো সিঙ্গেল লাইফ উপভোগ করতে পারতেন। তিনি নির্দ্বিধায় যা খুশি করতে পারতেন। কিন্তু খুব ভালো মানুষ বলে ওসবে না গিয়ে ধর্মীয় রীতি মেনে বিয়ে করেন। কথা বলা, বিয়ে করা, যা বুঝলাম টুটুল সঙ্গী হিসেবে অসাধারণ। এত ভালো মানুষ, সে যে মেয়ের সাথে আছে সে খুব ভাগ্যবান। আমি এমন একজন ভাল আত্মার সাথী পেয়েছি, সম্ভবত এটি একক জীবনের একটি বয়স বেঁচে থাকার জন্য আমার পুরষ্কার। অবশেষে এসআই টুটুলের এই জীবনসঙ্গী বলেন, অনেক কষ্টের পর টুটুল ডানা ভাঙা পাখির মতো আমার কাছে এসেছে। এই সময়ে তার এই সমর্থন দরকার ছিল। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ঘর ভাঙা দুজন মানুষ যদি এক হয়, একটি পরিবার গড়ে তোলে, তাহলে সবাই সুখী হবে। খুব খারাপ লাগে যখন কিছু মানুষ এটা না করে বা না বুঝে সমালোচনা করে। আমি সকলের কাছে প্রার্থনা করি আমরা যেন আমাদের বাকি জীবন একসাথে সুখে কাটাতে পারি।
উল্লেখ্য, এসআই টুটুল টুটুল ও তানিয়া আহমেদ ১৯৯৯ সালে বিয়ে করেন। এরপর থেকে তিনি সুখে সংসার করছেন। তাদের ঘর আলো করে পৃথিবীতে এসেছে দুই ছেলে ও এক মেয়ে। তিন সন্তান নিয়ে তানিয়া-টুটুলের আনন্দের শেষ ছিল না। কিন্তু তাদের সুখের সংসার ভেঙ্গে যায়। টুটুলের এই বিয়ের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই টুটুলের নতুন স্ত্রীকে নিয়ে কৌতূহলী হয়ে উঠেছে নেটিজেনরা। কে এই সোনিয়া? সে কি করে? খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসআই টুটুলের স্ত্রী শারমিনা সিরাজ সোনিয়া বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে উপস্থাপক হিসেবে কাজ করেছেন। এরপর স্থায়ীভাবে আমেরিকা গেলে সেখানে উপস্থাপনার পাশাপাশি বেশ কিছু সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।