বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় গায়ক এস আই টুটুল যিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন। দুই দশক পূর্বে মডেল ও অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন এস আই টুটুল। দীর্ঘ ২০ বছর তার দাম্পত্য জীবন পার করেন কিন্তু হঠাৎ করে গত দুই বছর ধরে তারা আলাদা থাকতে শুরু করেন। এর আগে তারা গণমাধ্যম এবং সাধারন মানুষের নিকট আদর্শ দম্পতি হিসেবে বিবেচিত হতেন। কিন্তু হঠাৎ করেই কিছুদিন আগে এস আই টুটুলের দ্বিতীয় বিয়ের খবর প্রকাশ পায়।
জানা গেছে, টুটুল ও তানিয়ার দুই দশকের স্বপ্নের সংসার ভেঙে গেছে। গত ৪ জুলাই আমেরিকার নিউইয়র্কে বসবাসরত টেলিভিশন উপস্থাপিকা শারমিনা সিরাজ সোনিয়াকে বিয়ে করেন টুটুল। এক বছর আগে তানিয়া আহমেদকে ডিভোর্স দেন এই তারকা গায়ক। তানিয়া ও টুটুলও গণমাধ্যমে এ কথা জানিয়েছেন।
এবার অনুসন্ধানে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। নিউইয়র্কে বসবাসরত একাধিক সূত্র জানায়, শারমিনা সিরাজ সোনিয়াকে রেজিস্ট্রি ছাড়াই হুজুরকে বাসায় ডেকে বিয়ে করেন টুটুল। বিয়ের পর কিছুদিন একসঙ্গে থাকলেও সোনিয়াকে রেখে নিউইয়র্ক ছেড়ে আমেরিকার ফ্লোরিডাতে চুপিচুপি বসবাস করছেন এই গায়ক।
সূত্র আরও জানায়, বিয়ের পর টুটুল তার স্ত্রী সোনিয়াকে ব্যবসার কথা বলে এবং টাকার জন্য বারবার চাপ দিতে থাকে। সোনিয়ার মনে, টুটুল তাকে কিছু না বলে গত ১ আগস্ট বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায়। এখন দুজনের মধ্যে কোনো যোগাযোগ নেই।
বিষয়টি জানতে টুটুলের দ্বিতীয় স্ত্রী সোনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমরা রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করিনি। বাড়িতে হুজুর ডেকে দুজন দুজনকে বিয়ে করি। বিয়ে করতে হলে অনেক নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয়। টুটুলের আগের স্ত্রীকে নাকি ডিভোর্স সংক্রান্ত কি ঝামেলা আছে এখনো।
এছাড়া আরও কিছু জটিলতার কারণে টুটুল বিয়ে রেজিস্ট্রি করেননি। টুটুল আর আমি একসাথে থাকি না। টুটুল কিছু একটা করতে চায়। পরিবারের জন্য অর্থ উপার্জনের জন্য, মনে হচ্ছে তিনি ফ্লোরিডায় অবস্থান করছেন। টুটুলও আমাকে বাংলাদেশে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। ফ্লোরিডাতেও থাকতে বলেছে। কিন্তু আমিতো নিউইয়র্কে ভালো চাকরি করছি। এখানে আমার প্রতিষ্ঠিত ক্যারিয়ার। আমার ছেলে রয়েছে। আমি চাইলেই তো কোথাও যেতে পারি না। টুটুলের গ্রিনকার্ড এখনো হয়নি। আবার ওর ছেলেকেও বাংলাদেশ থেকে এখানে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে।
যেহেতু আপনারা হুজুর ডেকে বিয়ে করেছেন। আর টুটুলার ওখানে তেমন ব্যস্ততা নেই। আপনারা চাইলেই তো একসাথে থাকতে পারেন? এমন প্রশ্নের জবাবে সোনিয়া বলেন, টুটুল ফ্লোরিডায় থাকতো। মাঝে মাঝে নিউইয়র্কে যেতেন। রেজিস্ট্রি বিয়ের আগে আমরা একসঙ্গে থাকব না। কারণ আমাদের পরিবার আছে। এর চেয়ে বেশি কিছু আপাতত বলতে পারছি না। আমি আপনাকে রিকুয়েক্ট করছি এ বিষয়ে আপাতত কিছু লিখবেন না। আরেকটু সময় যাক তারপর আমি বিস্তারিত বলব।
এদিকে সোনিয়ার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু জানান, আমেরিকায় বৈধভাবে বিয়ে করতে হলে আদালতে গিয়ে বিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। কোর্ট রেজিস্ট্রি ছাড়া হুজুরকে বাড়িতে ডেকে আনা হলেও হুজুর ম্যারিজ সার্টিফিকেট ছাড়া বিয়ে পড়ান না। আমেরিকায় এখন এটাই নিয়ম। আগে বিয়েতেও হুজুরকে ডাকা যেত। এখন তা সম্ভব নয়।
এ ছাড়া টুটুলের গ্রিন কার্ডের আবেদনে তার স্ত্রী হিসেবে এখনো তানিয়ার নাম দেওয়া আছে। সেখানে ডিভোর্সের কোনো কাগজপত্র জমা দেননি টুটুল। তাই টুটুল ও তানিয়া এখনো বৈধভাবে আমেরিকায় স্বামী-স্ত্রী। আইনত টুটুল ও সোনিয়া এখনো স্বামী-স্ত্রী নয়। স্বামী-স্ত্রী হিসেবেও তারা বৈধ নয়।
এদিকে তানিয়া এবং টুটুলের ডিভোর্সের বিষয় কতদূর এগিয়েছে, এ ধরনের প্রশ্ন করলে করা হলে সোনিয়া তেমন কোনো উত্তর দিতে পারেননি। তিনি জানিয়েছেন এ বিষয়ে তেমন কিছু জানায়নি টুটুল। তবে তার পিছনের যে ঝামেলা রয়েছে শীঘ্রই সে সেটার সমাধান করবে বলে জানিয়েছে। তবে টুটুল কিছু ব্যক্তিগত সমস্যার কথা জানিয়েছে সেটা সমাধান করার পর তিনি এই বিষয়ে সমাধান করে ফেলবে।