সারা বিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম ওঠানামা করছে আর সেই প্রভাব এসে পড়েছে বাংলাদেশেও। বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম অসহনীয় পর্যায়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার কারণে দেশের মানুষ পড়েছে কঠিন বিপাকে। এক রাতের ব্যবধানে জ্বালানি তেলের দাম আকাশচুম্বী হয়ে যাবে সেইটা কখনো ধারণা করতে পারেনি। সম্প্রতি জানা জানা গেল ডিজেলের দাম কমানোর বিষয়ে বিপিসির চেয়ারম্যানের বক্তব্য।
ডিজেলের দাম নিয়ন্ত্রণে সব অগ্রিম কর মওকুফ করা হয়েছে। এছাড়া আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ বলেন, ডিজেলের দাম এখনো প্রতি ব্যারেল ১৩২ ডলারে কমছে, যা আমাদের খরচের চেয়ে সাড়ে ৯ থেকে ১০ টাকা বেশি।
সোমবার (২৯ আগস্ট) বিপিসি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিপিসি চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
এবিএম আজাদ বলেন, দাম কমার সর্বশেষ তথ্য দিলে দেখা যাবে, পরিশোধিত তেলের গত ২৮ দিনের গড় দর এখনো ব্যারেল প্রতি ১৩২ ডলার। যা আমার খরচের চেয়ে প্রতি লিটারে 9.5 থেকে 10 টাকা বেশি। আমি ডিজেলের কথা বলছি।
শুধুমাত্র ল্যাব পরীক্ষার জন্য রাশিয়া থেকে খুব অল্প পরিমাণ তেল আমদানি করা হয়। বিপিসি চেয়ারম্যান বলেন, এর সঙ্গে আমদানির কোনো সম্পর্ক নেই।
তিনি আরও বলেন, পেট্রোল পাম্প মালিকদের ৩১ আগস্টের ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে।
এবিএম আজাদ বলেন, এনবিআরের নতুন প্রজ্ঞাপনে ভ্যাট কর কমানোর ফলে তেলের দামের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে কি না সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি উল্লেখ করেন, মন্ত্রণালয়ে আলোচনা করে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ সময় উপস্থিত পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ নাজমুল হক অভিযোগ করেন, নিয়ম না জেনে পেট্রোল পাম্পে অভিযান চালিয়ে ভোক্তা অধিকার হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে তথ্যপ্রমাণসহ বিপিসিতে অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিপিসি কার্যালয়ে পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সঙ্গে বৈঠক করেন বিপিসি চেয়ারম্যান।
রোববার (২৮ আগস্ট) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ডিজেল আমদানিতে এখন থেকে ব্যবসায়ীদের ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক, ৩ শতাংশ অগ্রিম আয়কর এবং ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। আজ (রোববার) থেকে কার্যকর হওয়া এই আদেশ আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
গত ৫ আগস্ট দুপুর ১২টার পর থেকে দেশে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। ওই দিন প্রতি লিটার ডিজেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ১১৪ টাকা, কেরোসিনের দাম ১১৪ টাকা, অকটেনের দাম ১৩৫ টাকা এবং পেট্রোলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। ১৩০ টাকা। এর আগে ডিজেলের দাম ছিল ৮০ টাকা, কেরোসিন ৮০ টাকা, অকটেন ৮৯ টাকা ও পেট্রোলের দাম ছিল ৮৬ টাকা।
প্রসঙ্গত, জ্বালানি তেল এমনই একটি জিনিস যেটা প্রত্যহ কাজে প্রয়োজন হয়। বিশে করে কল কারখানা ও বিভিন্ন ধরণের পরিবহণ চালানোর জন্য জ্বালানি তেল প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে জ্বালানি তেলের দাম সহনীয় পর্যায়ে আনা হবে বলে সরকার আশ্বাস দিয়েছেন।