বনাঢ্য আয়োজনের মধ্যে দিয়ে আলোচিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পরের দিন থেকেই যান চলাচলের জন্য সেতু খুলে দেওয়া হয়। সেতু খুলে দেওয়ায় যোগযোগ ব্যবস্থায় নতুন এক মাত্রা যোগ হয়। আগের মতন আর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে না যাত্রীদের। পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার পর থেকে কি পরিমান টোল আদায় হলো সে সম্পর্কে যা জানাগেল।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ার প্রথম মাসেই সুফল পেয়েছে দেশ। পথের ভোগান্তি কমেছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীদের। এবারের ঈদযাত্রায় ফেরিতে পদ্মা নদী পারাপারের দুর্ভোগ হয়নি। পদ্মা সেতু চালুর মাস পূর্ণ হয়েছে আজ সোমবার (২৫ জুলাই)।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর এক মাসে আদায় হয়েছে ৭৬ কোটি ১৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। এ সময় সেতু দিয়ে ৫ লাখ ৭০ হাজার ৪২০টি গাড়ি পার হয়েছে।
টোল কর্তৃপক্ষ জানায়, উদ্বোধনের পরদিন ২৬ জুন সেতুতে যান চলাচল শুরু হয়। ২৩ জুলাই পর্যন্ত হিসাবে এ টোল আদায় হয়েছে। গত ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। পরদিন যান চলাচল শুরু হয়। তবে দুর্ঘটনার মুখে সেতুর ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ রয়েছে।
পদ্মা সেতু দিয়ে চার ঘণ্টায় বরিশাল, যশোর এবং পাঁচ ঘণ্টায় খুলনায় যাচ্ছে বাস। সময় কম লাগছে পণ্যবাহী গাড়িগুলোরও। এতে দূরত্ব কমেছে, জ্বালানিও সাশ্রয় হচ্ছে। এ পর্যন্ত সেতুর উভয়প্রান্তে একাধিক দুর্ঘটনা ৫ জন মা/রা গেছে।
প্রকল্প সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২৫ সালে পদ্মা সেতু দিয়ে প্রতিদিন ৪১ হাজার ৫৫০টি যানবাহন পারাপার হবে। অনুমান অনুযায়ী, প্রথম বছরে টোল আদায় হবে ৫৪৩ কোটি টাকা। প্রথম বছরে আরও অনেক বেশি টাকা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। পদ্মা সেতু নির্মাণে ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে অর্থ বিভাগ। ১ শতাংশ সুদে ৩৫ বছরে ১৪০ কিস্তিতে ৩৬ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা পরিশোধ করবে সেতু বিভাগ।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এবারের ঈদে ফেরি চলাচলের ভোগান্তি কমেছে। যান সংকটে কারণে মাওয়া ঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। আরিচায় আগের মতো লম্বা সারি নেই। সরকারি পরিবহন সংস্থা বিআরটিসির বরিশাল ডিপোর ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম জানান, ঈদের সময় ঢাকা থেকে বাস এসেছে চার থেকে সাড়ে চার ঘণ্টায়।
এবারের ঈদে উপচে পড়া ভিড় ছিল কুয়াকাটায়। ছুটির দিন যা সাধারণত কক্সবাজারে থাকে। পদ্মা সেতুর কারণে দক্ষিণাঞ্চলের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটক বেড়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পদ্মসেতু দেখতে যান। সেতুর দুই প্রান্তে তাদের জন্য দোকানপাট গড়ে উঠেছে। সেতুর দক্ষিণ প্রান্তের বাসিন্দা আরিফুর রহমান জানান, এক মাসে দোকানপাট ছাড়াও রেস্তোরাঁ, রিসোর্ট ও বেসরকারি হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতুতে খুলে দেওয়া দক্ষিন অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক গতি পেয়েছে। নতুন কর্ম সংস্থানসহ পর্যটকের চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে।