জাতীয় নাগরিক কমিটির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে তীব্র সমালোচনায় মুখ খুললেন বিশিষ্ট সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দিন। এক আলোচনায় তিনি কমিটির কর্মকাণ্ডের বৈধতা, রাজনৈতিক অবস্থান এবং গণতান্ত্রিক চেতনার বিষয়ে একের পর এক কঠোর প্রশ্ন তোলেন।
কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারীকে উদ্দেশ্য করে খালেদ মুহিউদ্দিন প্রশ্ন করেন, “বিভিন্ন স্থানে বিচার ও সালিশ করার অধিকার কে আপনাদের দিয়েছে? গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বাইরে গিয়ে এসব কাজ করার অনুমোদন কোথায়?”
এমন কর্মকাণ্ডকে ‘মব-জাস্টিসের’ সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, “যেখানেই দেখছেন, সেখানেই মাতব্বরি করছেন। এভাবে চললে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে?”
জাতীয় নাগরিক কমিটির বিএনপির প্রতি সাম্প্রতিক কঠোর অবস্থান নিয়েও কথা বলেন তিনি। “গত ১৫ বছরে বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদের ওপর যে রক্ত ঝরেছে, তা ভুলে গিয়ে আপনারা তাদের ১০০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার কথা বলছেন। গণতান্ত্রিক চেতনা কি এভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে?”
নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারী বিষয়টি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলে, খালেদ মুহিউদ্দিন পাল্টা প্রশ্ন করেন, “আপনারা আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি না করে বিএনপিকেই দায়ী করছেন কেন?”
গণঅভ্যুত্থানের চেতনার প্রশ্নে নাসিরুদ্দিনের সমালোচনার জবাবে খালেদ মুহিউদ্দিন বলেন, “আমি গণতান্ত্রিক চেতনায় বিশ্বাস করি বলেই সরকারের স্বচ্ছতা এবং জনস্বার্থ নিশ্চিত করতে চাই। আপনারা আমাকে ট্যাগ লাগানোর আগে নিজস্ব কাজের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করুন।”
সম্প্রতি ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনকে নিয়ে একটি টকশো আয়োজনের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে ওঠা বিতর্কের বিষয়েও নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন তিনি। তিনি অভিযোগ করেন, “আপনারা আমার সঙ্গে কথা না বলে আমাকে প্রতারণার অভিযোগ করেছেন। এটা কি ন্যায্য?”
জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান থেকে উঠে আসা এই কমিটি রাজনৈতিক দল গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে ইতোমধ্যেই নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজে হস্তক্ষেপ এবং মব-জাস্টিসের মাধ্যমে সালিশ পরিচালনা করার অভিযোগ উঠেছে।
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। কেউ বলছেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড কমিটির গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, গণতন্ত্র রক্ষায় তাদের কিছু উদ্যোগ প্রশংসার যোগ্য।
জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতি খালেদ মুহিউদ্দিনের এই কঠোর সমালোচনা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনা সৃষ্টি করেছে। ভবিষ্যতে এই কমিটির কর্মকাণ্ড কেমন হবে এবং তা রাজনৈতিক অঙ্গনে কী প্রভাব ফেলবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।