সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে ছাত্রকে গু/লি করে হ/ত্যার অভিযোগে শিক্ষক রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে দুটি অবৈধ আ/গ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় অ/স্ত্র। ঘটনাটি অনিচ্ছাকৃত বলে দাবি করেন ওই শিক্ষক। এ জন্য তিনি দুঃখিত বলে আদালতকে জানিয়েছেন। সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক জুলহাজ উদ্দিন জানান, আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তিনি এসব কথা বলেন।
গু/লিবিদ্ধ ছাত্রের নাম আরাফাত আমিন তমাল (২২)। সে ওই মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের অষ্টম ব্যাচের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তমাল অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট আবদুল্লাহ আল আমিনের ছেলে। তিনি বগুড়া উপজেলা সদরের ধানসিন্দি নাতৈল গ্রামের বাসিন্দা। অভিযুক্ত কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক রায়হান শরীফ। রায়হান সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাকের ছেলে। শহরের দত্তবাড়ি মহল্লার বাসিন্দা তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ৫২তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন।
সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক জুলহাজ উদ্দিন জানান, ওই শিক্ষক তার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত বলে আদালতে জানিয়েছেন। এখন অনুতপ্ত হয়ে লাভ কি? তার যা করার ছিল সে করেছে। আসামি সাত দিনের রিমান্ডের আবেদনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তবে আসামি নিজের দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিল না। জামিনের আবেদনও করা হয়নি। আসামিরা দোষ স্বীকার করায় রিমান্ডের আবেদন করার প্রয়োজন ছিল না।
আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে বিচারক ও অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
রায়হান সিরাজগঞ্জ থেকে ২০০৭ সালে মাধ্যমিক এবং ২০০৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। ২০১৩ সাল থেকে তিনি ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পান। তখন থেকেই অ/স্ত্রের প্রতি ঝোঁক ছিল ড. রায়হান শরীফের। তিনি ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ওই সময় তিনি কলেজের পিংকু হোস্টেলে থাকতেন। এরপর থেকে নিজের টাকায় অ/স্ত্র কিনে সংগ্রহে রাখতেন।
প্রাথমিক তদন্তে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি)শাখা এই তথ্য জানান ডা. রায়হান শরীফ। সিরাজগঞ্জ ডিবির ওসি জুলহাজ উদ্দিন জানান, রায়হান শরীফের ব্যাগ থেকে দুটি বিদেশি পি/স্তল, ৮১ রাউন্ড তাজা গু/লি, ১টি গু/লির খোসা, ৪টি ম্যাগাজিন, ২টি বিদেশি কাতান (খঞ্জর) ও ১০টি আধুনিক বার্মিজ ছু/রি উদ্ধার করা হয়েছে।
রায়হান শরীফকে তার প্রাক্তন কর্মস্থল নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে চাকরীচ্যুত হয়েছিলেন একজন সিনিয়র সহকর্মীকে পি/স্তল দিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বর্তমান কর্মস্থলে এসেও পি/স্তল উঁচিয়ে হুমকি দেওয়া বন্ধ করেনি। মৌখিক অভিযোগ পেয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে দুটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। কিন্তু তিনি কোনো জবাব দেননি বলে জানান অধ্যক্ষ আমিরুল হোসেন চৌধুরী।
প্রসঙ্গত, গত ৪ মার্চ বিকেলে কলেজ ছাত্র আরাফাত আমিন তমালকে শ্রেণিকক্ষের ভেতরে গু/লি করেন শিক্ষক রায়হান শরীফ। এরপর রায়হান শরীফকে ঘরে তালাবদ্ধ করে শিক্ষার্থীরা। কিছু অসন্তুষ্ট কর্মচারীকেও বিদায় দেওয়া হয়। পরে পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে যায়।