সম্প্রতি রাজধানী একটি বাসে ফোনে কথা বলাকালীন সময়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী পারিশার ফোন নিয়ে যায় এক ছিনতাইকারী। বাসটি জ্যামে আটকা থাকা অবস্থায় এ ঘটনা ঘটে তবে ছিনতাইকারী ফোন নিয়ে যাওয়ার পরপরই বাস থেকে নিমে তার পেছনে পেছন দৌঁড়ে ধরার চেষ্টা করে ওই শিক্ষার্থী কিন্তু তাকে আর ধরতে পারে না। একপর্যায়ে হতাশ হয়ে দাড়িয়ে থাকেন। পরে আরেক ফোন ছিনতাইকারীকে দৌঁড়াতে দেখে তার পিছু নিয়ে তাকে ধরে ফেলেন এবং তার মাধ্যমে আরেক ছিনতাইকারী ধরে আলোচনা আসেন।
রাজধানীর কারওয়ানবাজারে ধাওয়া করে দুই ছিনতাইকারীকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে আলোচিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী পারিশা আক্তারকে চাকরির প্রস্তাব দিয়েছে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।একইসঙ্গে পারিশাকে সম্মাননাও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
গত রোববার পারিশাকে সম্মাননা দেয় একরেট লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। একই সময়ে, প্রতিষ্ঠানটি তাকে পড়াশোনার পাশাপাশি একটি পার্টটাইম চাকরির প্রস্তাবও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। পরিশাও এই কাজ করতে রাজি হয়। বেতন ভালো হবে।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়ামুল করিম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারিশা এই ধরনের সাহস দেখিয়ে আমাদের সমাজকে একটা মেসেজ দিয়েছেন। আমাদের সমাজে এমন সাহসী মেয়ে দরকার। সেটা ভেবে তাকে উৎসাহিত চেষ্টা করেছি। সমাজ গড়তে তাদের মতো সাহসী মেয়ে দরকার।
এভাবে আগামী দিনে অন্যায়ের বিরুদ্ধে মেয়েরা এমন সাহসী ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তবে এখনো পর্যন্ত অন্য ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার ও পারিশার ছিনতাই হওয়া ফোনটি উদ্ধার করতে পারিনি পুলিশ। এ ব্যাপারে মামলা করলেও কোনো সুফল মেলেনি। পুলিশ শুধু আশ্বাসের মধ্যে রেখেছে জানিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন পারিশা।
জবি ছাত্রী পরিশা বলেন, ‘সবাই আমাকে যে ভালোবাসা দিচ্ছে, এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সেদিন হয়তো কাউকে পাশে পাইনি, হতাশ হয়েছিলাম। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় যেভাবে সবাই ইতিবাচক রিভিউ ও ভালোবাসা দিয়েছেন তাতে আমি খুবই খুশি। এভাবেই সব সময় সবাইকে পাশে চাই।
পারিশা আরও বলেন, নারী-পুরুষ সবাই যে কোনো অন্যায় দেখলে সার্মথ্য অনুযায়ী সবাই যেন প্রতিবাদ করেন।’
গত ২১ জুলাই মিরপুর থেকে তানজিল পরিবহনে চাকরি ছাত্রী পরিশা আক্তার সদরঘাট যাচ্ছিলেন। পথে কারওয়ানবাজারে যানজটে ছিনতাইয়ের শিকার হন তিনি। তিনি দ্রুত বাস থেকে নেমে ডাকাতকে ধরার চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি অপর এক ব্যক্তির মোবাইল ফোন ছিনতাইকারীকে আটক করেন। ডাকাত ধরার ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে পারিশা ও তার সহপাঠীরা ছিনতাইকারী ও তার সহযোগীকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
প্রসঙ্গত, ওই শিক্ষার্থীর সাহসিকতার দৃষ্টান্ত দেখে তাকে একাটি প্রতিষ্ঠান চাকুরির সুযোগ দেন ও তার কাজের প্রশাংসা ও সম্মাননা প্রদান করেন। এ বিষয়টি নিয়ে বেশ উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন বলে তিনি জানান।