আইনি প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হয়ে খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসা নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে আইডিইবির জেলা ও সেবা সমিতির নেতাদের প্রতিনিধি সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত আগামীকাল রোববার (১ অক্টোবর) নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার গত সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) স্থায়ী মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসা চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মতামতের জন্য আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।
একই দিন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আইনের বিদ্যমান অবস্থান থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে সরকারের কিছু করার নেই। ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ৪০১ (১) এর অধীনে শর্তসাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে তাকে শর্তসাপেক্ষে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাহাত্ম্য। এখন আইনে কোনো পরিবর্তন হলে আগে খালেদা জিয়াকে দেওয়া শর্তসাপেক্ষে মুক্তি বাতিল করতে হবে। বাতিল করার পরে এবং পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরে যাওয়ার পরে অন্য বিবেচনা দেওয়া যেতে পারে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে সরাসরি আইন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা যাবে না। এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করতে হবে। আইন অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, কারাগারে যাওয়ার পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার আবেদন করা যাবে। বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিতে চাইলে আবার আবেদন করতে হবে। তাহলে আগের আদেশ বাতিল হয়ে যাবে। আদেশ প্রত্যাহার হলে তিনি (খালেদা জিয়া) বাইরে থাকতে পারবেন না।
তবে ড. শাহদীন মালিক গণমাধ্যমকে বলেন, ধারা ৪০১ অনুযায়ী শর্ত পরিবর্তনে কোনো আইনি বাধা নেই। সরকার কয়েকবার তার মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছে। অর্থাৎ অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। তাই বিদেশে চিকিৎসার জন্য নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়া ঢাকায় থাকবেন এবং প্রয়োজনে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিবেন। এখানে ঢাকা শব্দটি বাদ দিয়ে নতুন আদেশ জারি করতে আমি কোনো আইনি বাধা দেখছি না।
তিনি আরও বলেন, আইনমন্ত্রীর ব্যাখ্যা তার (খালেদা জিয়া) কারাগারে যেয়ে আপিল করা হবে। এই ব্যাখ্যাটি আমার কাছে আইনের যৌক্তিক ব্যাখ্যা বলে মনে হয় না।
বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানান, তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর আবেদন করা হয়েছে। সরকার নতুন করে আবেদনের কথা বলে সময় নষ্ট করছে এবং খালেদা জিয়াকে মৃ/ত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে আদালতের নির্দেশের প্রয়োজন নেই। নির্বাহী আদেশে সরকার তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। নির্বাহী আদেশে তাকে বিদেশে পাঠানো যেতে পারে।