সম্প্রতি অধিক হারে ঘটে যাওয়া বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগ ও ইউক্রেন ( Ukraine ) রাশিয়া ইস্যুতে দেশে শুরু হয়েছে লাগামহীন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। বিষয়টি নিয়ে এবার অনেকটা ভবিষ্যদ্বানী করলেন আওয়ামী লীগ ( League ) সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ( Sheikh Hasina. ) তিনি বলেন শুধু আমাদের দেশে নয়, সারা বিশ্বের মানুষ পড়তে পারে খাদ্য সংকটে। তখন হয়তো টাকা হলেও খাদ্য পাওয়া অসম্ভব হয়ে উঠবে। তিনি জানান, এমনই ধারণা গবেষণার মাধ্যমে তুলে এনেছেন বিশ্লেষকরা। তারপর তিনি দেশবাসীকে সতর্কমূলক ব্যবস্থা নেওয়া ও প্রতিকারের পরামর্শ দিয়েছেন।
রোববার বিকেলে আওয়ামী লীগ ( League ) আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের সম্মেলনে তার বক্তব্যে খাদ্য সংকট মোকাবেলার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলীয় কার্যালয়ে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালভাবে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে যারা সরকারের উন্নয়ন দেখেন না, তাদের চোখের চিকিৎসার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সরকার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নষ্ট করার জন্য তিনি বিএনপির ( BNP ) সমালোচনা করেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা অনেকটাই কৃষি অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল। এখন একদিকে ছড়িয়ে পড়া সংক্রমক রোগের ধাক্কা, অন্যদিকে যু”দ্ধাবস্থা। সব মিলিয়ে সারা বিশ্বে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে। সে জন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তাই আহ্বান জানাচ্ছি, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। যার যা আছে সে তাই করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সাইলো করছি। সেখানে খাবার মজুত করা হবে। এক বা দুই বছর বন্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে, মানুষের অনাহারে থাকা উচিত নয়। আমরা খাদ্য সংরক্ষণের আধুনিক ব্যবস্থা করছি। শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি, অনেকেই আছেন যারা দেশের কোনো উন্নতি দেখতে পান না। তাদের চোখ খারাপ থাকলে আমার বলার কিছু নেই। তারা দেখতে পায় না। কেন দেখে না? সেটা হচ্ছে, দেখার ইচ্ছা নাই তাই দেখে না।
উন্নয়ন নিয়ে সরকারের সমালোচকদের প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, “তাদের চোখে দেশে কোনো উন্নয়ন হয়নি”। এখন বলতে হবে চক্ষু ইন্সটিটিউট ও আমরা করেছি। যারা সরকারের বিরুদ্ধে বক্তৃতা দেয়, তারা উন্নয়ন দেখে না। উন্নয়ন দেখার মতো চোখে নাই তাদের, আমার মনে হয় তাদের চোখ পরীক্ষা করা দরকার। চক্ষু ইন্সটিটিউটে যান। তারপর হয়তো দেখতে পারবেন যে দেশের কোনো উন্নয়ন হয়ছে কিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওরা দেখছে না ১০০% বিদ্যুতের আওতায় এখন দেশ, ডিজিটাল বাংলাদেশ ( Digital Bangladesh ) হয়ে গেছে, বিদ্যুৎ ছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ ( Digital Bangladesh ) চলতে পারে না। আজ তারা ডিজিটাল বাংলাদেশ ( Digital Bangladesh ) ব্যবহার করছে। এটা কি উন্নতি করে? আজ পদ্মা সেতু ( Padma Bridge ), মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল ( Karnafuli Tunnel ), রূপপুর ( Rooppur ) পাওয়ার স্টেশন, এগুলো কি দেখা যাচ্ছে না? এগুলো কি উন্নয়নের লক্ষণ নয়? আজ দারিদ্র্যের হার কমেছে, এটা কী উন্নয়ন না কিন্তু তাদের চোখে পড়বে না। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি, এটা হয়তো তাদের দৃষ্টিতে উন্নয়ন নয়।
আওয়ামী লীগ ( League ) সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ ( Bangladesh ) আওয়ামী লীগ ( League )ের অর্থনৈতিক নীতিমালা আমরা প্রণয়ন করেছি, আমাদের ইশতেহারে ঘোষণা করেছি। নির্বাচনী ইশতেহারে আমরা যে পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তা একের পর এক বাস্তবায়ন করছি।বিএনপির ( BNP ) সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, “১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর এক এক করে ১৯ থেকে ২০টি সারি হয়েছে। যারা হাজার হাজার সামরিক কর্মকর্তা ও সৈ/’ন্যকে হ’/’ত্যা করেছিল তাদের কাছ থেকে আমাদের এখন গণতন্ত্রের কথা শুনতে হবে। সেই অভ্যুত্থানটাই ছিল জাতির দুর্ভাগ্য। গণতন্ত্র ধ্বং”/স হয়ে গেছে! তাদের কাছে গণতন্ত্রের সংজ্ঞা কী? আর যারা জনগণ থেকে জন্ম নেয়নি, তারা ব্যারাকে, ক্ষমতা দখলকারীদের পকেট থেকে জন্মেছে। এখন আমাদের গণতন্ত্র শেখাও, এটাই এই জাতির সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য।
তিনি বলেন, আমরা জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। যে গণতন্ত্র ক্যান্টনমেন্টে ব”ন্দি তা জিয়ার পকেটে বা এরশাদের পকেটে আর খালেদা ( Khaleda ) জিয়ার এলাকায়। আমরা তা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছি। আজ আমরা জনগণকে ক্ষমতায়িত করেছি। সেখানকার বিএনপি নেতারা যদি এখন গণতন্ত্র না দেখে, উন্নয়ন না দেখে, তাহলে আর কিছু বলার নেই।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ ( League )ের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ( Obaidul Quader ) এবং আলোচনা সঞ্চালনা করেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান ( Abdus Sobhan ) গোলাপ। বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ ( League )ের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী ( Begum Matia Chowdhury ), আবদুর রাজ্জাক ( Abdur Razzak ), মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী ( Mofazzal Hossain Chowdhury ) মায়া, কামরুল ইসলাম ( Kamrul Islam ), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ( Mozammel Haque ), আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ ( Shammi Ahmed ) প্রমুখ।
বিশ্ব এখন বাংলাদেশ ( Bangladesh )কে সম্মানের চোখে দেখে। দেশের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ( Sheikh Hasina. ) তিনি বলেন, ইতিহাস জানলে আমাদের নতুন প্রজন্ম ও প্রজন্মের মধ্যে একটি চেতনা জাগ্রত হবে, তারা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে এবং মানুষের কল্যাণে আরও কাজ করতে অনুপ্রাণিত হবে। প্রধানমন্ত্রী রোববার সকালে ( Sunday morning ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স ( Special Security Force ) (এসএসএফ) কার্যালয়ে মুজিব কর্নারে ( Mujib corner ) উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, এগিয়ে যাবে।
সর্বশেষ বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী জানান, জনগণের অধিকার আমরা জনগণকে ফিরিয়ে দিয়েছি। আমরা গণতন্ত্রকে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যায়নি। বিগত সরকারের তুলনায় আমরা দেশকে কতটা এগিয়ে দিয়েছি সেটা জনগণ দেখেছে। সুতরাং আমাদের উন্নয়ন কারা দেখল আর কারা দেখল না, সেটা নিয়ে আওয়ামী লীগ ( League ) অথবা বাংলাদেশ ( Bangladesh ) সরকারের মাথাব্যথার কোন কারণ নেই।