অভিভাবকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় ধর্ষণের শিকার ১৭ বছর বয়সী নাবালিকাকে নিয়ে একই উপজেলার আসামি মো. রাকিবুজ্জামানকে রাকিবের বিয়ের আয়োজন করতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে লালমনিরহাট কারা কর্তৃপক্ষকে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ গতকাল এ আদেশ দেন। উভয় পরিবারের বাবা-মায়ের সম্মতি ও মতামত নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট এই নির্দেশ দিয়েছে। আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. অজি উল্লাহ মোঃ ওজি উল্লাহ জানান, ২০২২ সালের ১৩ জুলাই লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সাহাবুদ্দিন সবুরের নাবালিকা মেয়েকে অপহরণ করে একই এলাকার মো. রাকিবুজ্জামান। পরে ২০২৩ সালের ৮ এপ্রিল অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মো. রকিবুজ্জামান রাকিবের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওই দিনই অপহৃত নাবালিকাকে উদ্ধার করে পুলিশ। একই সময়ে। রকিবুজ্জামান রাকিবকে আটক করা হয়।
ডাক্তারি পরীক্ষায় জানা যায় নির্যাতিতা অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু পরে ভ্রূণ নষ্ট হয়ে যায়। অপহরণের পর স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাসের জন্য বিয়ের সার্টিফিকেট তৈরি করা হয়। গত জুন মাসে মামলার আসামিদের জামিন দেন হাইকোর্ট। এই জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি শেষে চেম্বার আদালত আসামি রকিবুজ্জামান রাকিবের জামিন স্থগিত করে বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠান। এতে আসামি পক্ষও জামিন স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের আবেদন করেন। আজ সেই আপিলের শুনানি হয়। শুনানিতে অভিযুক্ত পক্ষ লিখিতভাবে আদালতকে জানায়, উভয় পক্ষই নির্যাতিতার সঙ্গে অভিযুক্তের বিয়ের ব্যবস্থা করতে রাজি হয়েছে। ভিকটিমকে বিয়ের শর্তে অভিযুক্তের জামিন চাওয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত নিহতের বাবা মো. সাহাবুদ্দিন সাবু আপিল বিভাগে বলেছেন, তার মেয়েও বিয়েতে আগ্রহী। শুনানি শেষে আদেশ পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে লালমনিরহাট কারা কর্তৃপক্ষকে বিয়ের আয়োজন করতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে তিনি পরবর্তী আদেশের জন্য ৪ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন। এতে বিয়ের সনদসহ যাবতীয় কাগজপত্র আদালতে জমা দিতে বলা হয়। আইনজীবী বলেন, বিয়ের সার্টিফিকেট দাখিল করার পর অভিযুক্তের জামিনের বিষয়টি বিবেচনা করবে সুপ্রিম কোর্ট।