সম্প্রতি শিক্ষকদের সাথে নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। যার কারনে বিষয় গুলো নিয়ে বিভিন্ন মহলে উদ্বেগের সৃষ্টি হচ্ছে। শিক্ষকদের সাথে সমাজে যদি এমন অপরাধমূলক ঘটনা একের পর এক ঘটে তাহলে সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থায় এর প্রভাব পড়বে। দেশের মানুষের নিকট একটি নেতিবাচক বার্তা পৌঁছাবে। এবার এমপি অধ্যক্ষকে মারেনি এমন বক্তব্যে অধ্যক্ষ সম্পর্কে যা বলা হল।
রাজশাহী-১ আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে ওঠা শিক্ষক পেটানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অধ্যক্ষ সেলিম রেজা ও সংসদ সদস্য নিজে। বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) দুপুরে ওমর ফারুক চৌধুরীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা জানান, ওই দিন অধ্যক্ষ ফোরাম নিয়ে নিজেদের মধ্য কোন্দল শুরু হলে ওমর ফারুক চৌধুরী তাদের মধ্যস্থতা করেন। মারধরে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নন তিনি।
এ ঘটনার জন্য রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদকে দায়ী করেছেন এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। শুক্রবার তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন কেন্দ্রে তাকে বিতর্কিত করতে গণমাধ্যমে এমন ঘটনা সাজানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তবে এ ঘটনায় এমপিকে স/ন্ত্রাসী বলেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।
গত ৭ জুলাই গোদাগাড়ী উপজেলার কলেজের অধ্যক্ষ ফোরামের সভায় সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর উপস্থিতিতে ঠিক কী ঘটেছিল তা নিশ্চিত করতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। মূলত মাটিকাটা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল রাজুর স্ত্রীকে নিয়ে অশালীন মন্তব্যের জেরে এ ঘটনার সূত্রপাত। এতে সভাকক্ষে রাজাবাড়ী কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে মারধর করা হয়। যার কালো দাগ এখনো তার বাম গালে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সেলিম রেজা কার হাতে মার খেয়েছেন? সেটা পরিষ্কার নয়।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী অধ্যক্ষ সেলিম রেজা লিখিত বক্তব্যে বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে সংসদ সদস্য কোনোভাবেই জড়িত নন।
সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী এ ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন বলে সাংবাদিকদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। তবে সম্মেলনের একপর্যায়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বেশ উত্তেজিত হয়ে পড়েন তিনি। এ ঘটনায় তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নষ্ট করার জন্য সাংবাদিকদের দায়ী করেন তিনি।
তবে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ ওই দিনের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এই এমপির বিরুদ্ধে অতীতেও এ ধরনের মারধরের মামলা হয়েছে। এখন চাকরি হারানোর ভয়ে সত্যের জায়গা থেকে সরে যাচ্ছেন এসব শিক্ষকরা। দীর্ঘদিন তিনি এমপি ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে এই জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
এএর আগেও কিছু ঘটনায় বেফাঁস মন্তব্য করেন রাজশাহী ১ আসনের এ সংসদ সদস্য নানাভাবে আলোচনায় আসেন। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে, তানোরের মুন্ডুমালা পৌর নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী সাইদুর রহমানকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে এমপি আলোচনায় এসেছিলেন।
এদিকে এমপি ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-নির্যাতনের তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরে শনিবার সংবাদ সম্মেলন করার ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ।
প্রসঙ্গত, অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে এমপি মারধর করেননি বলে তিনি নিজেই সাংবাদিকদের জানান। কিন্তু তাকে কে মারধর করেছে সে সম্পর্কে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যায়নি।