গতকাল দিবাগত রাতে খুলনায় গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার এর প্রয়ানের ঘটনা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগকে ভাবিয়ে তুলেছে। জানা গেছে খন্দকার লাবনী নামের খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা কর্মকর্তা ওড়নায় ঝুলে আত্মহ”নন করেছেন। এরপর কনস্টেবল মাহমুদুলের গু/”লিবি”দ্ধ নিথর দেহও উদ্ধার করা হয়। পরপর এমন ধরনের ঘটনার পেছনের রহস্য বের করার কারণ জানার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। দুটি ঘটনার মধ্যে কোনো যোগসূত্র আছে কিনা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তবে লাবণীর পরিবার জানিয়েছে, স্বামীর সঙ্গে তার ভুল বোঝাবুঝি চলছিল। এ থেকে এমনটি ঘটিয়ে থাকতে পারে।
পুলিশ জানায়, খন্দকার লাবনীর বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার বরালিদহ গ্রামে। তার স্বামী তারেক আবদুল্লাহ বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক (এডি) হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি ক্যা/”ন্সারে আ’ক্রান্ত এবং বর্তমানে ভারতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বাড়ির সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আ”ত্মহনন চেষ্টা করেন খন্দকার লাবণী। বিষয়টি টের পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে প্রয়াত ঘোষণা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা খন্দকার লাবনীর বাবা খন্দকার শফিকুল আজম বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে বলেন, বেশ কিছু দিন ধরে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির জের ধরে ঝগড়া চলছিল। এ কারণে তারা একে অপরকে এড়িয়ে চলছিল। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্ব’ন্দ্বের জেরে সে এমনটি করেছে। এর আগে ১৫ দিন ও এক সপ্তাহ আগে দুবার আ”ত্মহননের চেষ্টা করেছে সে।
অপরদিকে কনস্টেবল মাহমুদ সম্পর্কে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, মাহমুদ ভোরে ব্যারাকে ফিরে নিজের নামে শু”টারগা”ন নিয়ে আ”ত্মহনন করতে ছাদে যান। গু’/’লির শব্দ শুনে অন্যরা গিয়ে তাকে প্রয়াত অবস্থায় দেখতে পায়। গু/”লি তার মুখ দিয়ে ঢুকে যায়। তবে কী কারণে তিনি আত্মহননের ঘটনা ঘটিয়েছেন করেছেন তা এখনো জানা যায়নি।
মাহমুদুল হাসানের বাবা মো. এজাজুল হক খান চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের কনস্টেবল হিসেবেও কর্মরত আছেন। তিনি বলেন, দুই বছর চার মাস আগে আমার ছেলে পুলিশে যোগ দেয়। দেড় মাস আগে মাগুরায় আসার আগে তিনি খুলনা মহানগরে কর্মরত ছিলেন। গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফোনে তার সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়। তিনি জানান, যশোর রোডে ডিউটি করছেন। তার সাথে নৈমিত্তিক এবং হাস্যকরভাবে কথা বলেন। কিন্তু কেন সে এমন কেন করেছে বুঝতে পারছি না।’
মাগুরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, দেড় মাস আগে কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানকে মাগুরায় বদলি করা হয়। এর আগে তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি খন্দকার লাবনীর দেহরক্ষী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দুটি ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র আছে কিনা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এতটুকু নিশ্চিত, দুজনেই আ”ত্মহননের ঘটনা ঘটিয়েছেন। দু’জনের এই ঘটনার কারণ জানতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
লাবনীর পরিবারের সদস্যরা দাবি করছেন যে, লাবনীর স্বামীর সাথে ঝামেলা সৃষ্টি কারণেই তার মন-মানসিকতা ভেঙে যায়। তাছাড়া বেশ কিছু দিন ধরে তারা পরস্পরের থেকে দূরে দূরে থাকছিলেন। এই জন্য তাদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন তার পরিবার।