প্রেমের জন্য এবং প্রেমের মানুষকে কাছে পাওয়ার জন্য প্রেমিক-প্রেমিকারা কত কিছুই না করে এমনকি অনেক সময় প্রেমের কারনে জীবন দিতেও কুণ্ঠাবোধ করে না বর্তমানে প্রেমের টানে দূর দেশ থেকে বাংলাদেশে ছুটে আসছেন তরুণ-তরুণীরা এবং আবদ্ধ হচ্ছেন বিবাহ বন্ধনে এবার প্রেমের টানে এক সন্তানের জননী কে বিয়ে করতে বাংলাদেশে এসেছেন শ্রীলংকা এক যুবক এবং হয়েছেন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাহেনা বেগম (৩২) জয়পুরহাট সদর উপজেলার উত্তর পাথুরিয়া গ্রামের শাহাদুল ইসলামের মেয়ে। ২০১৪ সালে, তিনি গার্মেন্টসে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ থেকে জর্ডানে যান। পরে একটি পোশাক কোম্পানিতে যোগ দেন। একই কোম্পানির সুপারভাইজার শ্রীলঙ্কান যুবক রোশান মিঠুনের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। ধীরে ধীরে তাদের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। সেই বন্ধুত্ব গড়ায় প্রেমের সম্পর্কে।
এ বিষয়ে রাহেনা বেগম বলেন, পারিবারিকভাবে অল্প বয়সে বিয়ে হয়। আমারও একটি সন্তান আছে। আমি জর্ডানে চলে যাওয়ার কয়েকদিন পর আমার স্বামী আমাকে তালাক দেন। পরে আমি জর্ডানে আমার কোম্পানি সুপাইভাজার রোশানের সাথে পরিচয় হয়। অবশেষে আমরা দুজন দুজনার প্রেমে পড়ি। দেড় বছর আগে নিজের জন্মভূমি শ্রীলঙ্কায় ফিরে আসেন রোশান। একে অপরকে বিয়ে করতে রাজি হই। কিন্তু বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগের কারণে তা আর সম্ভব হয়নি। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে আমি দেশে চলে আসি।
রাহেনা আরও জানান, এরপর ফে’সবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের কথা হয়। রোশানের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেছি। রোশান ২২শে সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কা থেকে বাংলাদেশে আসে। পরে আমি তাকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে জয়পুরহাটে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) উভয় পরিবারের সম্মতিতে আমরা বিয়ে করি।
৩৩ বছর বয়সী শ্রীলঙ্কার যুবক রোশান মিঠুন একটু বাংলা বলতে পারেন। তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষকে অনেক ভালোবাসি। এখানে এসে বিয়ে করলাম। আমি এখানে থাকতে চাই।
উত্তর পাথুরিয়া গ্রামের প্রতিবেশী ইনু আরা বেগম বলেন, শ্রীলঙ্কান যুবক হলেও আমাদের বাংলাদেশের ছেলেদের মতো মনে হয়েছে। আমি প্রথমে শ্রীলঙ্কার ছেলে কিনা বুঝতে পারিনি। প্রতিবেশী হিসেবে আমরা খুবই খুশি। প্রতিবেশী শাহাজান আলী বলেন, প্রথমে শুনে অবাক হয়েছিলাম। শ্রীলঙ্কার এক যুবক জয়পুরহাটে আমাদের গ্রামে এসে রাহেনাকে বিয়ে করেছে। তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হোক।
শাহেদুল ইসলাম যিনি রাহেনার বাবা, তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে যেসময় জর্ডানে ছিল, সেই সময় রোশনের সাথে তার পরিচয় হয়। এরপর তারা দুজন দুজনের মধ্যে সম্পর্কে গড়ে ওঠে। এ বিষয়ে আমার মেয়ে আমাকে অবগত করে। পরবর্তী সময়ে আমি শ্রীলংকার ছেলে রোশানের পরিবারের সাথে কথা বলি এ বিষয়ে। আমার তাকে খুব পছন্দ হয়েছে। এরপর আমি রোশানকে আমাদের দেশে আসতে বলি এবং তাদেরকে বিয়ে দিয়ে দিয়েছি।