গাজীপুরের সব আসনে আওয়ামী লীগকে নিজেদের মধ্যে লড়াই করতে হবে। হেভিওয়েট প্রার্থী থাকলেও পাঁচটি আসনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সবাই আওয়ামী লীগের পরিচিত মুখ। তাদের চারজনেরই প্রতীক ট্রাক। তাদের মতে, এ জেলায় আওয়ামী লীগের প্রতীকই ট্রাক! যদিও নৌকার মাঝিরা এমন কথায় কর্ণপাত করছেন না। তবে স্বতন্ত্রদের জেতাতে জেলাজুড়ে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের দৌড়ঝাঁপ নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন।
এসব স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে ভোটের মাঠে গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের উপস্থিতি গত গাজীপুর সিটি নির্বাচনের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।
এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রিয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগের সাপোর্টিং প্রার্থী থাকুক। কেউ যেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী না হতে পারেন। তাই সব আসনেই আওয়ামী লীগের সাপোর্টিং প্রার্থী দিয়েছি।
জানা গেছে, গাজীপুর-১ আসনে নৌকার হেভিওয়েট প্রার্থী বর্তমান মন্ত্রিসভার সিনিয়র সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল হককে টেক্কা দিচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী কালিয়াকৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাসেল।
গাজীপুর-২ আসনে নৌকার প্রার্থী জাহিদ আহসান রাসেলের সঙ্গে লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন ও যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম। তবে বুদ্দিনকে টপকে নৌকা নিয়ে জয়ের বন্দরে যেতে রাসেলের পথটা খুব সহজ হবে না – সেটা এখন মোটামুটি পরিষ্কার। তাই স্বতন্ত্রদের জন্য নমনীয় হওয়া আওয়ামী লীগের এ নেতার দাবি দলের সবাই তার পক্ষে। যদিও তা একেবারেই উড়িয়ে দিলেন নৌকা পাওয়া আহসানউল্লাহ পুত্র জাহিদ আহসান রাসেল।
এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন বলেন, ‘আমি আদি আওয়ামী লীগার। গাজীপুরে আওয়ামী লীগের মার্কা হলো ট্রাক। তবে সারা দেশে আওয়ামী লীগের মার্কা নৌকা।’
এ আসনের প্রার্থী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, “তারা ভোটের মাঠে লড়াই করার চেষ্টা করছেন যেখানে তাদের অবস্থা খুবই খারাপ। আমাদের নেতাকর্মীরা ধৈর্য্য ধরে আছে। ইনশাআল্লাহ আমরা ৭ জানুয়ারিতে বিজয় দিয়ে তাদের জবাব দেব।
গাজীপুর-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে লড়ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেনের নৌকার মাঝি রুমানা আলী।
স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন বলেন, আমি শতভাগ নিশ্চিত যে জনগণের সাড়া আমাকে বিজয়ী করবে ৭ জানুয়ারি।
গাজীপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী সিমিন হোসেন রিমিকে হারাতে চান স্বতন্ত্র প্রার্থী আলম আহমেদ। কৃষক লীগের এই নেতা তাজউদ্দীন আহমদের ভাগ্নে।
গাজীপুর-৫ আসনে নৌকার প্রার্থী মেহের আফরোজ চুমকির সঙ্গে বিপাকে পড়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আখতারুজ্জামান।
এদিকে গাজীপুর-৫ আসনে নৌকার প্রার্থী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, কাজের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা করতে হবে। কিন্তু কাউকে ছোট করে বা মিথ্যা বলে, বাজে ভাষা ব্যবহার করে জয় হয় না। মানুষ তাকে নেতিবাচক হিসেবেও দেখে।
জেলার ৫টি আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৬ লাখের বেশি এবং মোট ৪৬ জন প্রতিযোগী।