Saturday , November 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / এবার ইসির প্রস্তাবে আপত্তি জানালেন ব্যাংকাররা

এবার ইসির প্রস্তাবে আপত্তি জানালেন ব্যাংকাররা

নির্বাচনে অংগ্রহন করা কে কেন্দ্র করে প্রার্থীদের গ্রহনযোগ্যতা সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন আলোচনা সভায় প্রস্তাব করা হয়েছিল যারা ঋণ খেলাপি তারা নির্বাচনে অংগ্রহন করতে পারবে। তবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা সভায় উপস্থিত আলোচকরা প্রস্তাবে রাজি হননি। এ বিষয়ে পরে আলোচনা করা হবে বলে ইসি প্রধান জানান।

প্রার্থীদের ঋণ ও বিল সংক্রান্ত বিদ্যমান আইন শিথিল করতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।

নির্বাচন কমিশনের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সাত দিন আগে সব ধরণের ঋণ ও বিল পরিশোদের ক্ষেত্রে প্রার্থীকে নিয়মিত থাকতে হবে।

ইসির এই আইন পরিবর্তনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি খেলাপি বা অনিয়মিত হলেও প্রার্থী হতে পারবেন। এ ব্যাপারে প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা থাকলে তিনি অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

সোমবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে ব্যাংক, সেবা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষকসহ ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক করেন।

ঋণ ও বিল মওকুফের বিষয়ে ইসির আইনি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে বৈঠক হয়। এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুর আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানাসহ ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে অংশ নেওয়া ব্যাংকিং ও সেবা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে (সিআইবি) তালিকাভুক্ত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অর্থ খেলাপি। মামলা করার বিষয়টি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। সেক্ষেত্রে আরপিওর বিদ্যমান বিধানই বহাল রাখা সমীচীন হবে।

বৈঠক শেষে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে অধিকাংশই বলেছেন, ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে এখন যে বিধান রয়েছে তা থাকলেই ভালো হয়। ইসির প্রস্তাবে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন না তারা। আরপিও সংশোধনের প্রস্তাব করা হবে কিনা সে বিষয়ে আরও আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সিইসির মতে, যারা বর্তমান বিধান লঙ্ঘনকারী নন তারাও অনেক সময় অযোগ্য হতে পারেন। নির্বাচনে দাঁড়ানোর সুযোগ একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। কারো অধিকার যাতে লঙ্ঘিত না হয় সেজন্য ইসি ভিন্নভাবে চিন্তা করেছে। ঋণ ও বিলের জন্য যাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে তাদের খেলাপি হিসেবে বিবেচনা করতে চায় ইসি।

বিল খেলাপির বিষয়ে সিইসি বলেন, বিল না দিলে লাইন কাটা যাবে। নানা কারণে হয়ত জানেনও না বিল খেলাপি হওয়ার তথ্য।. তাদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর তাদের খেলাপি হিসেবে ধরার প্রস্তাব দেয় ইসি।

হাবিবুল আউয়াল বলেন, বৈঠকে ব্যাংকাররা বলেন, সিআইবি প্রদত্ত তালিকার ভিত্তিতে খেলাপি নির্ধারণ করা হয়। মামলা করার বিষয়টি যুক্ত করতে চাইলে তাদের কোনো আপত্তি নেই।

পূবালী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক দেওয়ান রুহুল আহসান সাংবাদিকদের বলেন, তারা ব্যাংককে সিআইবি প্রতিবেদনকে অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন। এ ছাড়া বিদ্যমান আইন সংশোধন করে চাইলে মামলা যুক্ত করা যাবে।

তিনি বলেন, মামলা করতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে যাদের নাম সিআইবিতে আছে তাদের খেলাপি বলা যাবে। মামলা করতে অনেকগুলো ধাপ থাকে। এটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষ-ডেসকোর প্রধান প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, খেলাপিদের বিরুদ্ধে মামলা করার বিধান তারা মানতে রাজি নন। সে ক্ষেত্রে তারা বিদ্যমান বিধান বহাল রাখার পক্ষে মতামত দিয়েছেন।

তিনি বলেন, সময়মতো বিল পরিশোধ না করলে সংশ্লিষ্টরা খেলাপি হয়ে পড়ে। বিষয়টি গ্রাহককে জানানো হয়। তবে মামলা করতে গিয়ে সেবা প্রতিষ্ঠানে নানা ধরনের ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদ্যমান আইনের পক্ষে তাদের অবস্থানের কথা বৈঠকে জানিয়েছেন। তারা মামলা করতে রাজি নয়।

প্রসঙ্গত, যারা নির্বাচন অংশগ্রহন করবেন তারা ঋণ খেলাপি হলে তাদের প্রার্থিতা বাতিল হবে। এবার এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নতুন প্রস্তাবে সন্মতি দেননি সভায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।

About Babu

Check Also

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা কমাচ্ছে: রিজভী

দেশের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার তীব্র সমালোচনা করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *