হক গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদম তামিজি হক তার গোঁফ ও দাড়ি ছেঁটে এবং সম্পূর্ণ ক্লিন শেভ করার পর ইসরায়েলের নাগরিকত্ব চাইলেন। বাংলাদেশ থেকে তাকে দ্রুত উদ্ধারে ইসরায়েল সরকারের সহযোগিতাও কামনা করেন তিনি।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে গিয়ে এই সহযোগিতা চান।
এদিকে, ১৬ নভেম্বর রাতে মুখে দাড়ি রাখলেও ১৭ নভেম্বর অন্য একটি লাইভে দেখা যায় তিনি গোঁফ-দাড়ি কেটে ফেলেন।
ফেসবুক লাইভে আদম তামিজি বলেন, আমি ইসরায়েলের কাছে অভিযোগ করতে চাই, বর্তমানে আমি বাংলাদেশে আটকে আছি। গত তিন দিন ধরে আমার বাড়িতে পানি, বিদ্যুৎ ও খাবার বন্ধ রাখা হয়েছে। আমাদের উদ্ধার করা যাক। তাছাড়া ঘরে খাবার নেই, আমার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। সে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আমাদের দ্রুত উদ্ধার প্রয়োজন।. আমার মা অর্ধেক ইহুদি। আমি জন্মসূত্রে ইহুদি। আমি ইসরায়েলের নাগরিকত্ব চাই।
তার মা পোল্যান্ডের বংশোদ্ভূত পরিচয় দিয়ে আদম তামিজি বলেন, “আমার মা অর্ধেক পোলিশ।” আমি জন্মসূত্রে ইহুদি। আমি নিজেকে একজন ইহুদি হিসেবে দাবি করতে চাই। একই সঙ্গে ইসরায়েলের নাগরিকত্ব দাবি করতে চাইছি।
এর আগে এই শিল্পপতি শুক্রবার লাইভে এসে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে গিয়ে হেফাজত ইসলামের নেতা মামুনুল হকের মুক্তির জন্য দোয়া করেন।
তমিজি বর্তমানে ঢাকার গুলশানে নিজ বাসায় অবস্থান করছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দুই দিন ধরে তার বাসভবন ঘেরাও করে রেখেছিল। এ সময় রূপ পরিবর্তন ফেসবুক লাইভে আসেন তিনি।
বেশ কিছুদিন ধরে তিনি দেশের ভেতরে ও দেশের বাইরে থেকে ফেসবুক লাইভে অশ্লীল কথা বলেছেন। একপর্যায়ে তিনি তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট লাইভ পুড়িয়ে দেন। এরই মধ্যে তিনি ১৩ নভেম্বর ঘোষণা দিয়ে দেশে ফেরেন। পরে তাকে আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু করে র্যাব। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করা হয়নি।
এদিকে গ্রেফতারের ভয়ে গুলশানের বাসার প্রধান ফটকে ঝালাই করে রেখেছিলেন হক গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদম তমিজি হক। শনিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
কমান্ডার মঈন বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব সব নিয়ম মেনে আইনের আওতায় আনতে অভিযান চালায়। অভিযানে ম্যাজিস্ট্রেট ও চিকিৎসকসহ র্যাব বাহিনীর কর্মকর্তাদের নেওয়া হয়। তমিজি হকের প্রচারণার সময় বেশ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।
তিনি আরও বলেন, ওই সময় তার বাড়িতে একজন ব্রিটিশ নাগরিক উপস্থিত ছিলেন। সে নিজেকে তমিজির বন্ধু বলে পরিচয় দেয়। বাড়িতে তার চতুর্থ স্ত্রীও ছিল। আমরা সব নিয়ম মেনে তাকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি। কিন্তু তিনি ছুরি দিয়ে আ/ত্মহত্যার হুমকি দেন, ঘরের জানালার কাঁচ ভেঙে দেন, ভবন থেকে লাফ দেওয়ার হু/মকি দেন।
কমান্ডার মঈন আরো বলেন, আমরা তাকে গ্রেফতার করতে গেলে সে তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে ফেলে দেয়ার হু/মকি দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা তাকে গ্রেপ্তার করিনি। পরিস্থিতি আমাদের অনুকূলে থাকলে তাকে গ্রেফতার করা হবে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে সার্চ ওয়ারেন্ট রয়েছে।