দলীয় ক্ষমতা বলে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে নেতাকর্মীরা। যার ফলে দলের প্রতি নেতিবাচক ধারনার সৃষ্টি হচ্ছে সমাজে। ক্ষমতাকে কেন্দ্র করেই বেশির ভাগই এমন ঘটনা ঘটচ্ছে। যার কারনে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে দলের শীর্ষ নেতাদের। এবার যুবলীগ নেতা মনিরুজ্জামান জুয়েল কাছে একাধিক অ/স্ত্র আছে বলে যা জানাগেল।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা শাহজালাল মজুমদারের ওপর হামলার সময় আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করেন মনিরুজ্জামান জুয়েল নামে এক ব্যক্তি। সেই জুয়েলের আছে একাধিক অ/স্ত্র। জুয়েল গ্রামের দোকানে চা খেতে বসলেও সেটি প্রদর্শন করেন। হামলার শিকার শাহজালাল মজুমদার বলেন, ‘জুয়েল শ্রীপুর ইউনিয়নের নালঘর গ্রামের হাজি আলী আকবরের ছেলে। সে সবসময় বিভিন্ন অ/স্ত্র নিয়ে এলাকায় মহড়া দেয়। এমনকি গ্রামের দোকানে চা খেতে বসলেও, সে তার অ/স্ত্র প্রদর্শন করেছে।তার বিরুদ্ধে আদালতের একাধিক গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।তার পরও পুলিশ তাকে রহস্যজনক কারণে গ্রেফতার করেনি।আমি রবিবার (আজ)আদালতে মামলা করব।”তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলায় পরোয়ানা থাকায় গ্রেফতার থেকে বাঁচতে তিনি যুবলীগের পরিচয় ব্যবহার করছে।’ এদিকে হামলার পর ভাইরাল হওয়া দুটি ছবিতে মনিরুজ্জামান জুয়েলকে একই উপজেলার মিয়াবাজারে গ্রিন ভিউ রেস্তোরাঁর সামনে এক হাতে অ/স্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে মুচকি হাসতে দেখা যায়, অন্য হাতে সিগারেট। আরেকটি ছবিতে তাকে ব/ন্দুক হামলার দিন বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে দেখা গেছে। অন্য একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আগ্নেয়াস্ত্র হাতে হামলার দিন বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল থেকে চলে যাচ্ছেন তিনি। নাম-পরিচয় গোপন রেখে কুমিল্লা জেলা পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা রাইফেলটির মডেল সঠিকভাবে বলতে পারেননি। তবে তাঁরা বলেছেন, জুয়েলের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রটি পয়েন্ট ২২ (.২২) সোল রাইফেল নয়। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে ব্যক্তিগত গাড়িতে নিজ গ্রাম মান্দারিয়ায় ফিরছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান শাহজালাল মজুমদার। বিকালে নালঘর পশ্চিম বাজার সামাদ মেম্বারের বাড়ির কাছে তাঁর গাড়ির গতি রোধ করে হামলা চালান মনিরুজ্জামান জুয়েলসহ সাত-আট জন। এক পর্যায়ে হামলাকারীরা হকি স্টিক দিয়ে তার গাড়ি ভাংচুর করে। শাহজালাল মজুমদারের সমর্থকরা এগিয়ে এলে জুয়েল ও তার সঙ্গীরা পালিয়ে যায়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয় বলেও জানা গেছে। চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, ভাইরাল হওয়া ছবিটি বৃহস্পতিবারের নয়, অনেক আগের। যখন মনিরুজ্জামানের সঙ্গে শাহজালাল মজুমদারের ভালো সম্পর্ক ছিল। বৃহস্পতিবার ছবিটি আপলোড করেন তিনি। এদিকে ভাইরাল হওয়া জুয়েলের অ/স্ত্রসহ ছবি থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে তার স্ত্রী ফারজানা হক অ/স্ত্রটি নিয়ে জমা দেন। এ সময় ফারজানা একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এতে তিনি লেখেন, আমার স্বামী মনিরুজ্জামান হঠাৎ শারীরিক অসুস্থ হয়ে পড়ায় অ/স্ত্র ও গু/লির থানা হেফাজতে রাখার অনুরোধ করছি। পুলিশ কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, “ভাইরাল ছবিটি অনেক আগের। তবে ছবিটি সারাদেশে আলোচিত হওয়ায় তার পরিবার অ/স্ত্রটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। আমি দেখেছি অ/স্ত্রটির লাইসেন্স আছে।চেক ডিজঅনারের একটি মামলায় জুয়েলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে। তাই আমরা তাকে ধরার চেষ্টা করছি। অ/স্ত্রটি একটি আধুনিক জিএসজি-৫ মডেলের রাইফেল। এটির নম্বর (অ৩৫৪৯১৬)। এর গায়ে লেখা ‘মেড ইন জার্মানি’।
প্রসঙ্গত, যুবলীগ নেতা শাহজালাল মজুমদারের উপর হামলার বিষয়টি নিয়ে জয়েলের বিরুদ্ধে মামলা করবে বলে তিনি জানান। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে ছবি পোষ্ট করা হয়েছে সেটি অনেক আগের। তবে জুয়েলের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে তাকে ধরার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানানো হয়।