ড. হাসান মাহমুদ হলেন গণপ্রজাতন্ত্রী সরকারের মাননীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী। তিনি দেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবীদ। তার এই সম্মানীয় পদে আসীন হবার পর থেকে সততা ও নিষ্ঠার সহিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি তার এক বক্তব্যে বলেছেন অস্ট্রেলিয়াতেও ১৫-১৮ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার কয়েকটি এলাকায় ১৫-১৮ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে বলে দাবি করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাসান মাহমুদ। দেশে লোডশেডিংয়ের প্রেক্ষাপটে বিশ্ব পরিস্থিতির দিকে তাকানোর আহ্বান জানান মন্ত্রী। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ দাবি জানান।
এ বিষয়ে বিশ্ব পরিস্থিতির দিকে নজর দিতে বলেছেন ড. হাসান মাহমুদ বলেন, অস্ট্রেলিয়ার লাখ লাখ পরিবারকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের কথা বলা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় এক রাজ্যে ১০ ঘন্টা, অন্য রাজ্যে ১৫ ঘন্টা এবং অন্য রাজ্যে ১৮ ঘন্টা লোডশেডিং হয়েছে।
তিনি আরও দাবি করেন যে ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে লোডশেডিং হচ্ছে যেখানে কোনো সময় বিদ্যুৎ পাওয়া যায় না। এই সব উন্নত দেশের কথা বলছি।
মন্ত্রী বলেন, আমরা একটি উন্নয়নশীল দেশ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন। আজকে কোনো ১২-১৩ বছরের ছেলেকে যদি জিজ্ঞেস করেন হারিকেন কাকে বলা হয়, সে বলতে পারবে না। হারিকেন এখন আমাদের ড্রয়িং রুমে সাজিয়ে রাখার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ হারিকেনের ব্যবহার নেই। আজ থেকে ১৩-১৪ বছর আগে হারিকেন জ্বালিয়ে অনেকে পড়তে বসত।
আমরা সরকার গঠনের আগে বাংলাদেশের ৪০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পেত। আজ ১০০% মানুষের দোরগোড়ায় বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। এটিকে অর্থনৈতিকভাবে ব্যবহার করার আহ্বান কোনোভাবেই ভুল নয়। আমি যখন ঘরে থাকি না, তখন লাইট বা ফ্যান জ্বালানো ঠিক নয়। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের আহ্বান জানিয়েছেন এবং সরকারকে কত টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। যদি আপনাকে শুধুমাত্র বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৫০,০০০ কোটি টাকার বেশি ভর্তুকি দিতে হয়, তাহলে আপনি পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করবেন।
যেভাবে প্রধানমন্ত্রীর ডাকের পর সমালোচকদের দল, যারা সব সময় যেকোনো পরিস্থিতিতে অহেতুক সমালোচনা করে আবার কখনো কখনো গুজবও ছড়ায়। করোনার টিকা দেওয়ার সময় তাদের বক্তব্য গুজব ছড়ানোর মতো ছিল। পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হলে তাদের বক্তব্য ছিল গুজব ছড়ানোর মতো। তিনি আজ বিএনপির পাশাপাশি একই ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন বলে জানান মন্ত্রী।
এ সময় তিনি বিএনপি শাসনামলে বিদ্যুৎ না পাওয়ায় জনগণের আন্দোলন নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনের শিরোনাম পড়েন। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা জনগণের দোরগোড়ায় বিদ্যুৎ দিতে পারেনি, তারা আজ যেভাবে উচ্চস্বরে কথা বলছে, তা তাদের মুখে শোভা পায় না। বিশ্বে জ্বালানি সংকট তৈরি হয়েছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সংকট হচ্ছে উন্নত দেশগুলোও অর্থনৈতিকভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে যেগুলো বছরের পর বছর টাকা নিচ্ছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এর আগে বিদ্যুতের সিস্টেম লসও একটা অপচয় ছিল। সেই অপচয় অনেকটাই কমে গেছে। বাংলাদেশে আগের তুলনায় সিস্টেম লস এখন অনেক কম।
ড. হাসান বলেন, সরকার গত বছর বিদ্যুৎ খাতে ২৮ হাজার কোটি টাকা এবং জ্বালানি খাতে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। এই ভর্তুকি দিয়ে সারাদেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ভারতের তুলনায় বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম এখনো অনেক কম। কখনও কখনও এটি ঘটে না, তা নয়। তবে সরকার ও বিজিবি অনেক তৎপর।
প্রসঙ্গত, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে লোডশেডিং হয়না বললেই চলে। বিদ্যুত না থাকাটা যে কত বড় সমস্যার সেইটা মানুষ ভালোভাবেই বুঝতে পারে। বিদ্যুত ছাড়া এক পাও চলা সম্ভব না। তাই নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের নিশ্চয়তা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।