র্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ মাদকের ট্রানজিট রোড। এর থেকে বাঁচতে হলে মাদকের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি মাদক ও কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে ‘সর্বস্ব ব্যবস্থা’ নেওয়ার কথাও বলেছেন।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় শহীদ মিনারে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের নিরাপত্তা নিয়ে মতবিনিময় শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
এম খুরশীদ হোসেন বলেন, জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান কাজ। মানুষ স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে। সমাজব্যবস্থা যাতে সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে, সমাজের মানুষ যাতে কোনো হুমকির মুখে না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
র্যাব ডিজি বলেন, আপনারা জানেন রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও মিরপুরে এই কিশোর গ্যাংয়ের বিস্তার বেড়েছে, সেখানে অভিযান চালিয়ে র্যাব নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে।
র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, এসব যুবদলের কয়েকজনের আশ্রয় রয়েছে। তারা সবসময় আছে, তারা অতীতে ছিল, তারা আছে এবং তারা ভবিষ্যতে থাকবে। আমরা যুবদলকে নির্মূল করার চেষ্টা করছি, যারা তাদের চালাচ্ছে তাদেরও আইনের আওতায় আনব।
এম খুরশীদ বলেন, মাদক নিয়ে কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সেখানে গোয়েন্দা সংস্থা থেকে শুরু করে সব বাহিনীর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। মাদকের বিষয়টি এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে শুধু পুলিশ-র্যাব ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর দিয়ে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশও মাদক নিয়ন্ত্রণে অনেক অবৈধ ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে আমরা সে পথে যাচ্ছি না, আইনের মধ্যে থেকে মাদক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।
র্যাব প্রধান বলেন, দেশে যখন জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে, তখন দলমত নির্বিশেষে সামাজিকভাবে এর মোকাবিলা করলেও জঙ্গিবাদ নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। সেভাবে ওষুধও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
তিনি বলেন, এক সময় স্থলপথে বাংলাদেশে মাদক আসত। তখন ফেনসিডিল ও হেরোইনের প্রচলন ছিল বেশি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হলেও বাংলাদেশে ফেনসিডিল আসা বন্ধ করে দেয়। কারণ তখন ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় ফেনসিডিলের কারখানা ছিল। এরপর বাংলাদেশে ফেনসিডিলের চাহিদা অনেক কমে গেছে। স্থলপথে রাজশাহীর চারঘাট, বাগমারা এলাকা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও গোদাগাড়ীর ওপারের দিনাজপুর কুমিল্লা হয়ে মাদক আসত। এখন শুধু ফেনসিডিল নয়, বিভিন্ন স্থলপথ- সীমান্ত এলাকা, জল ও আকাশপথ দিয়ে অনেক বিপজ্জনক ওষুধ বাংলাদেশে আসছে।
এদিন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল-এর লেখা ‘সেভেন্টিন অব ড্রাগস: রিয়েলিটি অ্যান্ড সলিউশনস অব বাংলাদেশ’ এবং ‘কিশোর গ্যাং: ‘হাউ টু কাম, হাউ টু স্টপ’ শিরোনামের দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন র্যাব মহাপরিচালক। মইন।
বই দুটি সম্পর্কে তিনি বলেন, এ ধরনের বই কিশোরদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যেতে পারে বলে আমি মনে করি। পাঠ্যপুস্তকে মাদকের কুফল, কিশোর গ্যাং তুলে ধরলে অপরাধ কমবে।