দেশের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ওয়ান-ইলেভেনের সময় ব্যর্থ হওয়া ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা আবারও বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপির দাবি, এই ষড়যন্ত্রে জড়িত দেশবিরোধী মহল ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে দেশকে রাজনীতিশূন্য করতে চায়। একই সঙ্গে দেশের শিল্প ও ব্যবসায়িক খাত ধ্বংস করারও পরিকল্পনা রয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় সচেতন নাগরিকরা প্রতিবাদ শুরু করেছেন।
সম্প্রতি কারওয়ানবাজারে একটি জাতীয় দৈনিক অফিসের সামনে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভকারীরা ওই পত্রিকার সম্পাদককে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর এজেন্ট হিসেবে অভিযুক্ত করে তার বিচার দাবি করেন। ২০০৭ সালে এই পত্রিকার সম্পাদক খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করে আলোচনার জন্ম দেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি বলেছেন, “মাইনাস টু ফর্মুলা নিয়ে কেউ যেন নতুন করে ষড়যন্ত্র না করেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বাইপাস করে কিছু হবে না।” তার এই বক্তব্যের পর দল ও দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নিয়ে জোর আলোচনা চলছে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতারা বারবার সংস্কার কর্মসূচির ওপর জোর দিচ্ছেন। তবে আন্দোলনকারী বিভিন্ন মহল আগে নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে। সংবিধান, প্রশাসন ও পুলিশ খাত সংস্কারের জন্য কমিশনগুলো কাজ করলেও এই উদ্যোগগুলো নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা চলছে। আর লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানের দেশে ফেরার পথেও নানা আইনি ও প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি করা হচ্ছে। এর ফলে দলের ভেতরে অসন্তোষ দানা বাঁধছে।
ওয়ান-ইলেভেনের সময় প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদক মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নে ভূমিকা রেখেছিলেন বলে বিএনপির নেতারা অভিযোগ করেছেন। এসময় বিভিন্ন সম্পাদকীয় এবং প্রচারণার মাধ্যমে রাজনীতিবিদদের উচ্ছেদ এবং সুশীল সমাজকে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়।
প্রসঙ্গত, প্রথম আলো অতীতে ইসলামবিরোধী কৌতুক প্রকাশ এবং বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকলেও বারবার পার পেয়ে গেছে বলে ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। ২০০৭ সালে এমন একটি ঘটনার পর সম্পাদক করজোড়ে ক্ষমা চেয়ে রক্ষা পান।
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতি নতুন করে দেশের রাজনীতিতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পারে। রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যে এই উত্তেজনা কতদূর গড়াবে, তা সময়ই বলে দেবে।