বাংলাদেশে সফররত রয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার মিচেল ব্যাচেলেট। আর এবারের সফর দেশের জন্য বেশ গুরুত্ববহন করছে। বিশেষ করে দেশের মানাবধিকার লঙ্ঘনের বিষয় যাচাই করতেই মুলত এবারের সফরে এসেছেন তিনি। এ দিকে বাংলাদেশে নির্বাচনের সময় সুশীল সমাজের জন্য আরও ‘স্পেস’ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল, সংগঠন, মানবাধিকার কর্মী, বিরোধী দল, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের কর্মীদের সভা করার সুযোগ দিতে হবে।
বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সামাজিক বিশৃঙ্খলা দূর করতে রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের মধ্যে সংলাপের জন্য আরও ‘স্পেস’ থাকা দরকার। অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ না করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করাও জরুরি।
তিনি বলেন, নারী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, আদিবাসী এবং বিশেষ করে তরুণদের দাবি শোনা উচিত।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারকে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আমন্ত্রণ জানানোর জন্য তিনি বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
ব্যাচেলেট বলেন, “আমি আশা করি যে আমার সফর জাতিসংঘের মানবাধিকার ব্যবস্থার সাথে সরকারের সম্পৃক্ততা বিকাশে এবং সহযোগিতাকে আরও গভীর করতে সহায়তা করবে।”
সফরকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, আইন ও শিক্ষামন্ত্রী এবং অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি কূটনীতিক ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
ব্যাচেলেট জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবাধিকার বিষয়ক বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
তিনি বলেন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ যা সরকারকে অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। “সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে আমার মতবিনিময় ছিল সমৃদ্ধ এবং অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ,” ব্যাচেলেট বলেছিলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের পরবর্তী ধাপের জন্য গণতান্ত্রিক ও নাগরিক স্থানের পাশাপাশি কার্যকর, ভারসাম্যপূর্ণ ও জবাবদিহিতা অপরিহার্য।
জাতিসংঘের হাইকমিশনার বলেন, এটি টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সুষ্ঠু আর্থিক ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি ও অন্যান্য বাধার ঝুঁকি কমাতে অবদান রাখে।
সংবাদ সম্মেলনে, ব্যাচেলেট সংখ্যালঘু গোষ্ঠী – যেমন হিন্দু এবং আদিবাসীদের – সহিংসতা বা জমি দখল থেকে রক্ষা করার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, চার দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন হাইকমিশনার মিচেল ব্যাচেলেট। আর সেই থেকেই সরকার পক্ষের প্রধানমন্ত্রী সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সাথে বৈঠক করেছেন।সফর শেষে তিনি ফিরে যাবেন এবং রিপোর্ট করবেন জাতিসংঘে।