ডিএমপির ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) সানজিদা আফরিন নিপার সঙ্গে বরখাস্ত অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদের বিয়ে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় চলছে। তবে সানজিদার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তারা বিয়ে করেননি। যেহেতু বিয়ে হয়নি তাই ডিভোর্সের প্রশ্নই আসে না।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সানজিদার বড় বোন হোসনে আরা কামনা জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্যে তারা বিব্রত।
সানজিদার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার নাগদা শিমলা ইউনিয়নের সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান সানজিদা আফরিন নিপা। তার বাবা হোসেন আলী গত বছর বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পরে উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি উপজেলার নগদা শিমলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাতবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হোসেন আলী দীর্ঘদিন গোপালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলীর চার কন্যার মধ্যে সানজিদা আফরিন নিপা তৃতীয়। বড় মেয়ে হোসনে আরা কামনা সুতি ভিএম সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। দ্বিতীয় মেয়ে তানজিনা আফরিন স্মৃতি একজন চিকিৎসক। ছোট মেয়ে সাদিয়া আফরিন বন্যা বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক। তাদের পরিবারের খ্যাতি ছড়িয়ে আছে গোপালপুরে।
সানজিদার পরিবারের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি গণমাধ্যমকে জানান, ২০১৭ সালের ১০ মার্চ গাজীপুরের কাপাসিয়ার বাসিন্দা আজিজুল হক মামুনের সঙ্গে সানজিদা আফরিন নিপার বিয়ে হয়। পারিবারিকভাবে এই বিয়ে হয়। কিন্তু সানজিদা এই বিয়েতে রাজি ছিলেন না। এ কারণে বিয়ের পর থেকে স্বামীর সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না। সানজিদা দীর্ঘদিন তাঁর স্বামীর বাড়ি গাজীপুরে এএসপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
চলতি বছরের শুরুতে সানজিদাকে ঢাকায় বদলি করা হয়। সাম্প্রতিক একটি ঘটনায়, হারুনের সাথে পূর্বে বিয়ে হয়েছিল এডিসি সানজিদার এবং তাদের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে – এমন গুজব সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে। বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন সানজিদার বোন হোসনে আরা কামনা। তিনি বলেন, আজিজুল হক মামুনের সঙ্গে সানজিদার বিয়ে হয়েছে। রাষ্ট্রপতির এপিএস মামুনই সানজিদার স্বামী। এডিসি হারুন তাঁর কলিগ মাত্র। তাঁর সঙ্গে সানজিদার বিয়ে হয়নি। বিয়ে না হলে তো ছাড়াছাড়িরও প্রশ্ন নেই।
সানজিদাসহ তাঁর অন্য বোনদের শিক্ষক ও পারিবারিকভাবে ঘনিষ্ঠ এক শিক্ষক গণামধ্যমকে বলেন, আমিও সানজিদার বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথিরাও উপস্থিত ছিলেন। তার পরে আর কোন বিয়ের কথা আমার জানা নেই। সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন খবরে আমরাও হতবাক।
গোপালপুরের নগদা শিমলা ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার (বিবাহ জজ) শামছুল হক আজিজুল হক মামুনের সঙ্গে সানজিদার বিয়ের কথা জানান। তিনি জানান, ২০১৭ সালের ১০ মার্চ পারিবারিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়।