স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ছাত্রলীগকে মারধরের ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত এডিসি হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এডিসি হারুনের ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। ভুক্তভোগীরা চাইলে মামলা করতে পারে। বিভাগীয় মামলা হতে পারে।
এদিকে শাহবাগ থানার ওসি (তদন্ত) কক্ষে ছাত্রলীগ নেতাদের মারধরের ঘটনায় পুলিশের এক শ্রেণির কর্মকর্তাদের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দিয়েছে। এক পক্ষ মনে করছে, ওই রাতে যা ঘটেছে তা অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে। পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য এটা করা হচ্ছে। অন্যদিকে এডিসি হারুন-অর-রশীর বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার ঘটনা নতুন নয়। আগের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে জবাবদিহি করা হয়নি বলে তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। এ কারণে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলে বাহিনীর সুনাম বাড়বে।
ঘটনার সূত্রপাত, পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ এবং উপস্থিত সবার ভূমিকা নির্ধারণে ডিএমপির তিন সদস্যের একটি দল কাজ করছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে দুই দিন সময় দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। তবে তদন্তের পরিধি ব্যাপক হওয়ায় তারা আরও পাঁচ দিন সময় পেয়েছেন বলে জানান ডিএমপির ডিসি। ফারুক হোসেন। এদিকে কমিটির এডিসি হারুন-অর-রশিদ, এডিসি সানজিদা আফরিন, পরিদর্শক মো. গোলাম মোস্তফা, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন নাঈম, ঘটনার মূল হোতা শরীফ আহমেদ মুনিমসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন ছাত্রলীগের বৈজ্ঞানিক বিষয়ক সম্পাদক মো. , বিবৃতি গ্রহণ. এডিসি সানজিদা আফরিনের স্বামী রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক খান মামুনকে চিঠি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, এডিসি হারুন ও সানজিদা এ ঘটনার মূল দায়িত্ব তদন্ত কমিটির কাছে এপিএস মামুনকে দিয়েছেন। অপরদিকে ভুক্তভোগীরা পুলিশ কমিটির কাছে ঘটনা ও নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা। এডিসি হারুন-অর-রশিদকে বরখাস্ত ছাড়া এখন পর্যন্ত প্রায় সব দাবি পূরণ হয়েছে। ছাত্রলীগ, পুলিশ ও সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ঘটনাকে ঘিরে যাতে কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় তা নিশ্চিত করাই ছিল মূল লক্ষ্য। এ কারণে ঘটনার পরপরই আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের নির্দেশনাও দেয়। বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শাহবাগ থানার গেটে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে তা নিয়ন্ত্রণে আসে। পরদিন এডিসি হারুনকে রমনা জোন থেকে প্রত্যাহার করে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) সংযুক্ত করা হয়। আবার একই দিনে তাকে এপিবিএনে বদলি করা হয়। এতে তিনি আপত্তি জানালে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়। এতেও আপত্তি তোলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তিনি সর্বশেষ রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত ছিলেন। এতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অনেকটা শান্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এডিসি সানজিদার সঙ্গে যোগাযোগের সূত্র ধরে সভাপতির এপিএস মামুনের সঙ্গে এডিসি হারুনের বিরোধ হয়। এ ঘটনার জের ধরে গত শনিবার রাতে শাহবাগ থানায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে নির্মমভাবে মারধর করেন এডিসি হারুন। এ ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।