আনোয়ার হোসেন নাঈম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন। এ সময় স্বজনরা জানান তার হাত ও ঘাড় বাঁকা হয়ে যাচ্ছে বলে জানালে, সঙ্গে সঙ্গে কর্তব্যরত চিকিৎসক এসে পরীক্ষা করেন। পরিবারের সদস্যরা জানান, নাইমের মুখে ও দাঁতে আঘাতের সন্দেহে তাকে পরীক্ষা করা হয়েছে। তিনিও বুকে চোট পেয়েছেন বলে এখন ধা/রনা করছেন চিকিৎসকরা।
এ জন্য ইসিজিসহ আরও কিছু পরীক্ষা দেওয়া হয়। গতকাল সোমবার দুপুরে নাঈম হাসপাতালে গিয়ে এসব তথ্য পান।
চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে, নাইম অনেক নি/র্যাতনের শিকার হয়েছে। শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন তিনি।
পরিবারের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মফি বলেন, বিকেলে তার অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়। হাত বাঁকা, ঘাড় ভিতরে ঢুকে যাচ্ছিল। প্রচণ্ড ঘামতে থাকে।
তিনি আমাদের হাত ধরে টানছিলেন। আমরা খুব ভয় পেয়েছিলাম। পরে ডাক্তার ঘুমের ইনজেকশন দিলে এক ঘণ্টা ঘুমানোর পর আগের চেয়ে ভালো বোধ করেন।
নাঈমের চোটের বিষয়ে তার চাচাতো ভাই আকাশ বলেন, ‘তার দাঁত ভেঙ্গে যায়নি। তবে মুখে আঘাতের কারণে দাঁত নড়ে গেছে।
মুখ, নাক ও ঠোঁটে সবচেয়ে বেশি আঘাত পেয়েছেন তিনি।
বিকেলে নাইমের বিছানায় তার খালা মাসুদা, চাচাতো ভাই ও অন্যান্য আত্মীয়রা ছিলেন। রোববার মা/রধরের খবর শুনে নাইমের মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা তাকে দেখতে আসেন। খালা মাসুদা নাইমের খাবার খেতে কষ্ট হচ্ছে জানিয়ে বললেন, ঠোঁট ফোলা বলে সে তরল ছাড়া কিছু খেতে পারে না? বোতলে জুস রাখলে একটু একটু করে খাচ্ছে।
নাঈমের বড় ভাইয়ের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার লাবণ্য এর আগে বলেন, “ছোটবেলা থেকে এ পর্যন্ত কেউ নাঈমকে একটা ফু/লের টোকাও দেয়নি। শাসন করার দরকার হতো না। সব সময় ভালো কাজ করতো, পড়াশুনায় ভালো ছিল, মেধাবী ছিল, শান্তশিষ্ট ছিল। এতো ভালো ছেলেকে কেউ মারতে পারে, আল্লাহ কি সহ্য করবেন?’
গতকাল বিকেলে নাইমের জন্য পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ। বোর্ডের প্রধান হিসেবে আছেন ওরাল অ্যান্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোঃ ওয়ারেছ উদ্দিন। তিনি কালের দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমি ও নাক-কান-গলা, জেনারেল সার্জারি, নিউরোসার্জারি, মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। আমরা তাকে দেখেছি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। চিকিৎসাও চলছে।
আনোয়ার হোসেন নাঈম গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার মোলাইত গ্রামের আলাউদ্দিন মেম্বারের ছেলে। পাঁচ ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে নাঈম চতুর্থ। শনিবার রাতে শাহবাগ থানায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের এডিসি (বর্তমানে সাময়িক বরখাস্ত) হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে নাইমকে নি/র্যাতন করা হয়। তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের সভাপতি।