সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলছে তোলপাড়। প্রচারণায় মেতে উঠেছে আইভী এবং তৈমূর দুজনেই। ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে লড়ছেন আইভী তাইতো সহিংসতার ভয় তৈমূরের। তাই তো তেমন কোনো পরিবেশ তৈরি হলে সেটার দায় বদ্ধতা প্রশাসনের ওপর এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন তৈমূর আলম। বক্তব্যে উল্লেখ করে বলেছেন নানা প্রসঙ্গ নিয়ে কথা।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার জন্য পুলিশ প্রশাসন দায়ী থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার।
বুধবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে নির্বাচনী পথসভায় এ কথা বলেন তিনি।
অ্যাডভোকেট তৈমূর বলেন, ‘আপনারা আমার পক্ষে ও নারায়ণগঞ্জের জনগণের মার্কা হাতির পক্ষে যে প্রচারণা চালাচ্ছেন তাতে আমি আপনাদের কাছে আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। আমি নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করবো তারা যেন তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখেন। সরকারি প্রার্থীকে জেতানের জন্য পুলিশ প্রশাসন আমার সঙ্গে যে আচরণ করছেন এটা অমানবিক। গণতন্ত্রকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে আপনারা লিপ্ত হয়েছেন। রবিসহ সব নেতাকর্মীর আমি মুক্তি দাবি করছি। এই মুক্তি হবে গণতন্ত্রের মুক্তি। এটা না হলে পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য পুলিশ ও প্রশাসন দায়ী থাকবেন। ’
তিনি আরও বলেন, আমি আপনাদের কাছে দোয়া চাই। যারা আমাকে ফুল দিয়ে এই জনতার মার্কার প্রতি প্রচারণা চালাচ্ছেন, পরিশ্রম করছেন, বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন, আমি যেন তাদের সঙ্গে কোনো বেইমানি না করি। আমার দ্বারা যেন কোনো গণবিরোধী কাজ না হয়। কারও পেটে লাথি দেওয়ার আগে আমি যেন পুনর্বাসন করতে পারি। নারায়ণগঞ্জের খেটে খাওয়া মানুষ, কর্মজীবী মানুষ যাদের পেটে লাথি দেওয়া হয়েছে, মাথার ছাদ কেড়ে নেওয়া হয়েছে, যাদের বাড়িঘর ছাড়া করা হয়েছে তাদের পুনর্বাসন অবশ্যই করা হবে।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটবে, পাশাপাশি শহর হবে পরিচ্ছন্ন। যারা জীবিকা নির্বাহ করে তাদের স্বাচ্ছন্দ্যে জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। কোনো খেটে খাওয়া মানুষের পেটে লাথি দেওয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, আল্লাহ মজলুমের পক্ষে থাকেন। আজকে এ শহরের প্রতিটি মানুষ এই সিটি করপোরেশন দ্বারা নির্যাতিত। সিটি করপোরেশন হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স ফি বৃদ্ধি করেছে। পানির লাইনের জন্য অতিরিক্ত দেড় লাখ টাকা নিচ্ছে। নারায়ণগঞ্জে গ্যাস, সুপেয় পানি নেই। রাস্তাঘাটে যানজট, পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ময়লা আবর্জনা নিরসনে কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেই। পঞ্চবটীতে যেখানে ময়লা ফেলা হতো, সেখানে পার্ক করা হচ্ছে। দ্বিগুবাবুর বাজার পারিবারিকভাবে মুনাফা দেওয়া হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন একটা সিন্ডিকেট। ঠিকাদাররা সিটি করপোরেশন চালায়। আমি ওয়াদা করতে চাই আল্লাহ মঞ্জুর করলে আমরা এই সিটি করপোরেশনকে জনগনের কাছে নিয়ে যাবো।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগে যেই সুযোগ, সে সুযোগ থেকে এবং সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বিজয় খালেদা জিয়ার মুক্তিকে ত্বরান্বিত করবে।
নির্বাচনী প্রচারণায় কেউ কারো থেকে কম নেই। তাইতো খুব সহজেই নলে দেওয়া যায়না কে জিতবে। দুজনেরই কনফিডেন্স লেভেল অনেক বেশি, কিন্তু আসলে জয়ী কে হবে সেটা তো বোঝা যাবে ভোটের পরে। দল থেকে বাদ পড়লেও যে দলের প্রতি ভালোবাসার কমতি নেই তৈমূর আলম এর সেটা তার শেষের দিকের বক্তব্যের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এখন দেখার বিষয় মেয়র হিসেবে কাকে বিজয়ী করে জনগণ।