দেশের একজন প্রবীণ নাগরিক হিসেবে নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার জবাবে আমার প্রশ্ন, এটা আসলে কি নির্বাচন হচ্ছে, নাকি নির্বাচন নির্বাচন খেলা হচ্ছে? আমরা যদি আইনি সংজ্ঞা দেখি, আইনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভিধান হল বিকল্পগুলির মধ্যে নির্বাচন করা। তাই যেখানে বিকল্প নেই সেখানে নির্বাচন হতে পারে না। মনে হচ্ছে একতরফা নির্বাচন হবে। মনে হচ্ছে, এখানে জাতীয় পার্টিই একমাত্র বিকল্প। চয়েসের মতে, জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের বিকল্প নয়। যদি আপনাকে এক গ্লাস মিনারেল ওয়াটার এবং এক গ্লাস কলের জল দেওয়া হয়, তবে এটি প্রতিস্থাপন করা যাবে না। আপনি সেখানে কলের জল বেছে নেবেন না। এক গ্লাস ফুটানো পানির সাথে যদি এক গ্লাস মিনারেল ওয়াটার দেওয়া হয়, তাহলে আপনার পছন্দ হবে। কারণ এখানে দুটোই নিরাপদ পানি। তাই এটাকে সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন বলা যাবে না। আইনগত সংজ্ঞা অনুসারে এটি মোটেও নির্বাচন নয়।
তাছাড়া নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিলের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি গঠন করা হলে তা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এই নির্বাচন কমিশনের আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এখন দেখার বিষয় এই নির্বাচন কমিশন তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারে কি না। এর সাংবিধানিক দায়িত্ব হলো সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন ও পরিচালনা করা। এখন দেখা যাচ্ছে বিরোধী দলসহ অন্যান্য দল নির্বাচনে অংশ নেবে না। তারা বলছেন, নির্বাচনী পরিবেশ নেই। এই নির্বাচন কিভাবে হবে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন? নির্বাচন কমিশনও কয়েকদিন আগে একই কথা বলেছে, নির্বাচনের পরিবেশ নেই।
তাছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নও কয়েকদিন আগে বলেছে, তারা পর্যবেক্ষক পাঠাবে না, কারণ এখানে নির্বাচনের পরিবেশ নেই। আমেরিকা বারবার বলেছে নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করতে সংলাপের বিকল্প নেই। তাহলে নির্বাচন কমিশন কি গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ম্যান্ডেট পূরণ করতে পারবে? একটা কথা, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন এবার নাও হতে পারে। কারণ মানুষ এখন অনেক সচেতন।
ম্যান্ডেট পূরণ না হলে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে ঠেলে দেওয়া হবে যেখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বং/সের দ্বারপ্রান্তে চলে যাবে। এই বিষয়গুলিকে বিবেচনায় নেওয়া দরকার এবং স্টেকহোল্ডারদের কী করতে হবে তা নির্ধারণ করতে হবে, যাতে এমন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় যা জনগণের আস্থা প্রতিফলিত করে এবং জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য শাসন প্রতিষ্ঠা করে।