দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে খেলার মাঠ। বলতে গেলে, এখন শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠগুলো ছাড়া আর কিছুই নেই। তবে রাজনৈতিক প্রভাবের ফলে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠগুলো থেকেও বঞ্চিত হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। সম্প্রতি এ বিষয়টি নজরে আসতেই রীতিমতো দুঃখ প্রকাশ করেছেন ক্ষমতাসীন দলের শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে আয়োজিত থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকায় লজ্জা ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। মন্ত্রী বলেন, আমি আসলে খুবই বিব্রত। এটা আমার অজান্তেই ঘটেছে। আগের দিন ঢাকার দক্ষিণখানে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে গিয়েছিলাম। আমি চলে আসার পর জেনেছি যে সেখানে আশেপাশের বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাঠটি ব্যবহার করে। সেখানেই ওই রাজনৈতিক সমাবেশ হয়। আমি খোঁজ নিয়ে জানালাম, সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। শিক্ষা কার্যক্রম চলছে বলা হলেও বাস্তবে কতটা চলেছে জানি না। সেখানে প্যান্ডেল করা হয়েছে তখন শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি নির্বিঘ্নে হয়েছে এটা মনে করার কোনো কারন নেই। এর জন্য আমি সত্যিই খুব লজ্জিত এবং দুঃখিত।
বুধবার রাতে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গত সোমবার রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
দীপু মনি বলেন, দু-একটি পত্রিকায় খবর এসেছে। যেহেতু তিনি শিক্ষামন্ত্রী তাই এ বিষয়ে কথা বলতে চান। সবাই বলছেন, খেলার মাঠের সংখ্যা কমছে। খোলা মাঠ এখন শুধুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ। এর বাইরে খুব বেশি মাঠ নেই। এলাকাভিত্তিক রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান নির্বিশেষে দেখা যায়, বিকল্প কোনো মাঠ না থাকায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ ব্যবহার করা হয়।
দীপু মনি বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-সংক্রান্ত কর্মসূচি পালনের জন্য আমাদের মোটামুটি নির্দেশনা রয়েছে। তবে বাইরের কোনো অনুষ্ঠান আমি নিরুৎসাহিত করি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর বিকল্প নেই। কিছুই করার থাকে না। তখন বলা হয় শিক্ষা কার্যক্রম যেন ব্যাহত না হয়। আমি সত্যিই বিব্রত. ঘটনাটি আমার অজান্তেই ঘটেছে।
প্রবাদে আছে, শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতিই উন্নয়নের শিখরে পৌছাতে পারে না। আর সেহেতু শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হলে, শিক্ষার্থীদের মানসিক দিকটিও ভেবে দেখতে হবে সবাইকে।