আলোচিত পদ্মা সেতু তৈরী করাকে কেন্দ্র করে দেশ ও দেশের বাহিরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। তবে সব কিছুকে পেছনে ফেলে নিজেস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষের পর্যায়। এ মাসেই যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে পদ্মা সেতু। এবার পদ্মা সেতু নিয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বের অন্যতম দ্রুত প্রবাহিত নদী পদ্মা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের কাজ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সফলভাবে মোকাবিলা করা হয়েছে। অর্থাৎ আমরা বাংলাদেশ যা করতে পেরেছি, কারো কাছ থেকে হাত পেতে নয়, ভিক্ষা নয়, নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। ‘
তিনি বলেন, তাই আমরা মাথা উঁচু করে বিশ্ব দরবারে চলব। কারণ আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি এবং বিজয়ী জাতি হিসাবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলব। ‘
প্রধানমন্ত্রী রোববার তার কার্যালয়ের শাপলা হলে আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে দেশের সুনাম বয়ে আনা খেলোয়াড়দের মাঝে সম্মাননার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
বিশ্বব্যপি ছড়িয়ে পড়া রোগ ও দেশের বন্যা পরিস্থিতির কারণে বর্তমান পরিস্থিতি কিছুটা অস্বাভাবিক উল্লেখ করে কৃতি খেলোয়াড়দের সংবর্ধনা দিতে পেরে সবসময়ই আনন্দের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, খেলার মাঠে সব সময় চিন্তায় রাখতে হবে আমরা যুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি আমরা বিজয়ী জাতি। হারজিত খেলায় আছে এটা ঠিক কিন্তু মাথায় এটা রাখতে হবে যে আমাকে জিততে হবে।
খেলাধুলার পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও শিল্প প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালি ব্যবসা করবেন আর ইন্ডাস্ট্রি করবেন আর পয়সা বানাবেন সেটা তো হয় না। দেশের জন্য তো কিছু করতে হবে। এটাই আমি চাই। এই ম্যাসেজটা আমাদের ব্যবসায়ীদের দিয়ে দেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, খেলোয়াড়দের ব্যবসায়ীরা নিয়োগ দিলে তারা পুরোপুরি খেলায় মনোযোগ দিতে পারবে। জীবিকা নির্বাহ নিয়ে চিন্তা করার দরকার প্রয়োজন হয় না।
বেসরকারি খাতে সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যত বেশি সহযোগিতা করব তত ভালো। যারা দেশের সম্মান বয়ে আনবে তাদের জীবিকার সুযোগ দিতে হবে।
“তিনি বলেন, খেলোয়াড়রা কেবল খেলাধুলাই করবে এবং দেশে যত বেশি ক্লাব হবে, যত বেশি প্রতিযোগিতা হবে খেলাধুলায় তত বেশি উৎকর্ষতা বাড়বে। সেই ধরনের পরিবেশ আমাদের গড়ে তুলতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেছেন যে তার সরকার গ্রামীণ খেলাধুলার প্রচার ও প্রসারে জোর দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ কান্ট্রি গেমস অ্যাসোসিয়েশনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
সারাদেশে উপজেলা পর্যায়ে নির্মাণাধীন মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের কাজ ত্বরান্বিত করতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন তিনি। তিনি বলেন, যেসব জায়গায় স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য জমি পাওয়া যাচ্ছে না, সেখানে প্রয়োজনে জমি কিনে প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করতে বলেন তিনি।
ক্রীড়া ক্ষেত্রে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের দেশের জন্য বিভিন্ন অর্জনের কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের যদি এক সময় বোঝা মনে করা হয়, সুযোগ পেলে তারা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনতে পারে। ” তারা প্রমাণ করেছে তারা দেশের সম্পদ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুতায়ন এবং তৃণমূল পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিয়ে দেশকে এভাবেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। দেশের একজন মানুষও যেন আর গৃহহীন না থাকে সেজন্য সব গৃহহীন-ভূমিহীনকে ঘর করে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যপি ছড়িয়ে পড়া রোগের কারণে উন্নয়নের গতি কিছুটা ব্যাহত হয়েছে, কারণ এটি সমগ্র বিশ্বকে প্রভাবিত করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ থেমে থাকেনি, এগিয়েছে।
জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণের সেই অমোঘ মন্ত্র ‘আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’ স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, কেউ আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারেনি এবং পারবেও না।
প্রসঙ্গত, সরকার দেশকে এগিয়ে নেওয়া জন্য সকল ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি আমার বিজয়ী জাতি আমাদের কেউ আটকে রাখতে পারবে না।