বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে নারীদের নানামুখি উন্নয়ন সাধন হয়েছে এবং সেই সাথে দেখা গিয়েছেন এই না্রীদের কর্মসংস্থান এবং নারীদের শিক্ষার বিষয়ে বেশ গুরুত্ব দিয়েছে সরকার এবং তারই ধারাবাহিকতায় এখন নারী শিক্ষার হার বাড়ছে, তবে এবার নারীদের পাশাপাশি পুরুষদের সুবিধা দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার।এ ব্যপারে শিক্ষামন্ত্রী ড.দীপু মনি বলেছেন নারীরা এগিয়েছে, দেশে পুরুষদের কোটা দেওয়ার সময় এসেছে। তিনি বলেন, নারীদের জন্য বিনিয়োগ হচ্ছে স্মার্ট অর্থনীতি। তারপরও বৈষম্য অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ অবশ্য এর ব্যতিক্রম।
মন্ত্রী বলেন, নারী শিক্ষায় আমরা অনেক এগিয়েছি। এক সময় নারী শিক্ষায় ৩০ শতাংশ কোটা ছিল। যেহেতু তারা পিছিয়ে ছিল, কোটার মাধ্যমে তাদের এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে গত কয়েক বছরে কোটা ছাড়াই পুরুষদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে নারীরা। এখন সময় এসেছে পুরুষদের কোটা দেওয়ার।
সোমবার (২৫ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে মালালা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এডুকেশন চ্যাম্পিয়ন নেটওয়ার্কের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে গিয়ে দেখেছি, স্বর্ণপদক বিজয়ীদের ৭০ শতাংশই নারী। তাই পুরুষদের সব কিছুর পাশাপাশি পড়াশোনায় উৎসাহিত করা উচিত। তবে বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণায় নারীরা পিছিয়ে রয়েছে। এ সময় তাকে প্রজননের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সমাজ নারীদের জন্য পরিবেশ তৈরি করলে তাদের পক্ষে বিজ্ঞান চর্চায় অবদান রাখা সম্ভব। আমাদের সেটা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে মালালা ফাউন্ডেশনের এডুকেশন চ্যাম্পিয়ন পিপলস ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশনের (পিওপি) নির্বাহী পরিচালক মোরশেদ আলম সরকার বলেন, আমরা কিশোরগঞ্জের নিকলী হাওরে শিশুদের শিক্ষা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, জুন-জুলাই মাসে বর্ষাকালে শিশুরা স্কুলে যেতে পারে না। জলের জন্য।” তা না হলে তারা বাদ পড়তে পারে। তাই হাওর অঞ্চলের শিশুদের জন্য আলাদা সিলেবাস করা যায় কি না তা শিক্ষামন্ত্রী বিবেচনা করবেন।
তিনি বলেন, হাওর এলাকার মানুষ অমানবিক জীবনযাপন করে। একই বাড়িতে একপাশে মানুষ, অন্যদিকে গবাদি পশু। তাই আমরা বোটিং স্কুল শুরু করেছি। মেয়েদের জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাওরে মেয়েরা তাড়াতাড়ি বিয়ে করে, এখন পরিস্থিতি অনেক বদলে গেছে। হাওরের জন্য আলাদা সিলেবাস কোনো শিশুকে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে না।
তার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা চাঁদপুরে অনেক চর রয়েছে। বর্ষাকালে প্রবল ঢেউয়ের কারণে পদ্মা-মেঘনা উপচে পড়া এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। দেশের সব হাওর ও চর এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নমনীয় স্কুল ক্যালেন্ডার তৈরি করা যেতে পারে। আমরা খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে আলোচনা করব।
নারীদের পাশাপাশি এখন পুরুষদের ও কোটা দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার এবং সেই লক্ষ নিয়ে কাজ করার ব্যপারটি জানালেন শিক্ষামন্ত্রী দীপুমনি।রাজধানীতে এডুকেশন চ্যাম্পিয়ন নেটওয়ার্কের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেছেন, অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মালালা ফাউন্ডেশনের বাংলাদেশী প্রতিনিধি মোশাররফ হোসেন তানসেন- ক্যাম্পেইন ফর পপুলার এডুকেশনের (ক্যাম্প) প্রধান ড. মনজুর আহমেদ, ফ্রেন্ডশিপ এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রুনা খান এবং মালালা ফাউন্ডেশনের গ্লোবাল প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ঈসা মিয়া।