মানবাধিকার, সংবিধান ও গণতন্ত্র জীবন্ত পোস্টমর্টেম করা হয়েছে। আইন-কানুন আওয়ামী গেস্টাপো দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা তার অপার ক্ষমতায় সব নিয়ম-কানুন, সংবিধান, শৃঙ্খলাকে পদদলিত করে দেশে এক বুনো শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার বক্তব্য মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের সংগ্রহ ছাড়া আর কিছুই নয়। তাদের অদ্ভুত আচরণ দেখে মনে হচ্ছে কেউ তাদের পিছন থেকে তাড়া করছে এবং তারা প্রাণের প্রাণ বাঁচাতে দৌড়াচ্ছেন ঊর্ধ্বশ্বাসে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রীরা বিশ্বকে অপমান করছে। ভোটকেন্দ্র ও পূর্বনির্ধারিত ফলাফলসহ ভোট গণনা শেষ হওয়ার আগেই চার দিনে বিশ্ব রেকর্ড গড়ে বিপদমুক্ত বলে মনে করেন শেখ হাসিনা।
তিনি আরও বলেন, তাকে (শেখ হাসিনা) অস্থির লাগছে। তড়িঘড়ি আতঙ্কে ক্ষমতা নবায়নের অবৈধ শপথ নিতে গিয়ে কবরে লেখা হয়েছে আইন ও সংবিধান। শেখ হাসিনা সংবিধান ছিন্ন করে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা অর্জন করেছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, নিশিরাতের সংসদের মেয়াদ আগামী ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত; শেখ হাসিনার নির্দেশে সংসদ ভেঙে দিয়ে অবৈধভাবে শপথ নিলেন আরেক সংসদ! এখন দুই সেট অবৈধ এমপি আছে দেশে। কেউ ডবল, কেউ বাতিল।
রিজভী বলেন, ওয়ান ইলেভেনের ১১তম বর্ষপূর্তিতে প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় মন্ত্রিসভা না ভেঙে আরেক মন্ত্রী শপথ নেন! গণেশের ভয়ে তার খুব অস্থির কার্যকলাপ উল্টে যাবে। হীরক রাজার দেশে যেমন খুশি তেমন চলছে। আমি যা বলব, যা ভাবব তাই করব।
তিনি বলেন, দেশের আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের মধ্যরাতে একাদশ জাতীয় সংসদে ৩৫০ জন এবং ডামি দ্বাদশ সংসদের ২৯৮ জন সদস্য রয়েছেন, মোট ৬৪৮ জন শপথগ্রহণকারী সংসদ সদস্য রয়েছেন। এখন রাষ্ট্রপতি সংসদ আহ্বান করলে উভয় সংসদ সদস্য এতে উপস্থিত থাকতে পারেন। কিন্তু এটা সাংবিধানিকভাবে বেআইনি। আগামী ২৯ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই নৈরাজ্য চলবে। এটা সংবিধানের চরম লঙ্ঘন।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দেশে দেড় দশক ধরে ভোট বঞ্চিত জনগণের মৌলিক দাবি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। কিন্তু শেখ হাসিনা ও তার লুটেরা পরিষদ বিনা ভোটে, নিশি ভোটে, ডামি নির্বাচনে একের পর এক নির্বাচন করে ক্ষমতা দখল করে দেশে বন্য আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। শেখ হাসিনা একক কর্তৃত্বে পরিণত হওয়ার জন্য একটি ‘হার্ড-হিটিং ইমেজ’ তৈরি করছেন এবং সত্যিই হবুচন্দ্র রাজার রাজ্য তৈরি করছেন।
তিনি বলেন, বাকশাল রাষ্ট্রে শেখ হাসিনার নির্দেশে বিচার বিভাগ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা সবই পরিচালিত হচ্ছে।
রিজভী বলেন, পুরনো বাকশাল নতুন দানব হয়ে জনগণকে বিরক্ত করছে। এই নব্য-পেশাবাদী ক্যাবলের বিরুদ্ধে এখন না দাঁড়ালে এই জাতির অস্তিত্ব থাকবে না।
আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও আইনের শাসনকে পদদলিত করে অসম্মানজনক প্রতিযোগিতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে বিএনপিসহ ৬৩টি সমমনা দলের চলমান আন্দোলনকে আরও জোরদার করতে এই সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।