জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, এখন পর্যন্ত বিরোধী দল হওয়ার কোনো সংকেত পাইনি। আমরা এখন পর্যন্ত কিছুই জানি না। আশা করছি সংসদ অধিবেশন শুরুর আগে আমরা স্পিকারের কাছ থেকে মতামত পাব।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে রংপুর নগরীর সেনপাড়াস্থ স্কাই ভিউ বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, ‘গত সংসদে আমরা প্রধান বিরোধী দল ছিলাম। দেশ ও জাতির কল্যাণে আমরা সব সময় বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করেছি। সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা এবং অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে আমাদের সুপারিশসহ জনগণের পক্ষ থেকে উত্থাপিত দাবিগুলো আমরা তুলে ধরেছি। আমরা এখনো সেই রাজনীতি করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সংসদে প্রধান দুটি দলের মধ্যে আওয়ামী লীগ অন্যতম। নৌকার ব্র্যান্ডের ভিত্তিতে তারা দলগতভাবে সরকার গঠন করেছে। এরপর আমরা জাতীয় পার্টির ১১ জন সংসদ সদস্য লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে আরেকটি রাজনৈতিক দল। আর যারা আছেন তারা আওয়ামী লীগের ঐকমত্যের মধ্যেই আছেন। এ কারণে আমরা মনে করি, সরকারের বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি আরও বলেন, সরকার যদি জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দল হিসেবে অবস্থান না দেয় তাহলে দেশ ও জাতির কল্যাণে সরকারের বিরুদ্ধে একমাত্র দল হিসেবে সরকারের সমালোচনা করার দায়িত্ব আমাদের থাকবে। সরকারের ভুলগুলো জনগণের চোখে তুলে ধরে সরকারকে সঠিক পথে পরিচালনার জন্য সংসদে সুপারিশ করা। তাই যেকোনো পর্যায়ে আমাদের সিদ্ধান্ত আমরা বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করব। এই মুহূর্তে এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ।
জিএম কাদের বলেন, “বিরোধী দলের নেতা বা অন্য পদ নির্ধারণ করা স্পিকারের এখতিয়ারের মধ্যে। যদিও আমরা জানি সার্বিকভাবে এটা (বিরোধী দল) জাতীয় পার্টিকে পেতে হবে। আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি তা হলো, আমরা সংসদ থেকে একটি রেজুলেশন নিয়েছি। জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল আমাকে বিরোধীদলীয় নেতা, আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে উপনেতা ও মজিবুল হক চুন্নুকে চিফ হুইপ হিসেবে প্রস্তাব করে আমরা তা মাননীয় স্পীকার বরাবর চিঠির মাধ্যমে পেশ করেছি।
দল ভেঙ্গে নতুন দলও গঠন করা হচ্ছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। এ অবস্থায় জাতীয় পার্টির অবস্থান প্রসঙ্গে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘জাতীয় পার্টি দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্রের শিকার। সরকার থেকে সরে আসার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে। এক্ষেত্রে অনেক কিছুই কাজ করেছে। আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিল। তার বিরোধীরা নানাভাবে তা নষ্ট করার চেষ্টা করে। অনেক ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচার হয়েছে, যা পরবর্তীতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু এখন বিচ্ছেদের সম্ভাবনা দেখছি না।
জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলা সদস্য সচিব হাজী আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আলাউদ্দিন মিয়া ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবু, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক মো. এবং রংপুর জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শফিউর রহমান শফি, কেন্দ্রীয় সদস্য ও রংপুর মহানগরের সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, সহ-সভাপতি জাহেদুল ইসলাম, জাতীয় যুব সংহতি রংপুর জেলার সভাপতি হাসানুজ্জামান নাজিম, সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মাসুদ নবী মুন্না প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।