ময়মনসিংহের গৌরীপুরে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের সঙ্গে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রশিদের পরকীয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষিকার সঙ্গে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে শিক্ষিকার আত্মীয়স্বজনদের হামলার শিকার হন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আবু রায়হান ও আব্দুর রামিধ। হামলার পরপরই আবু রায়হানকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে ওই শিক্ষকের বাবা গণমাধ্যমকে বলেন, সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রশিদের সঙ্গে ৫-৬ মাস আগে পারিবারিকভাবে বিয়ের প্রস্তাব আসে। আমার সন্তানরা সেই প্রস্তাবে মিশ্র মতামত প্রকাশ করেছিল এবং প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। এরপর বিয়ের প্রস্তাব এলে বিয়ে ভেঙে দেন। শুক্রবার আমার মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। বুধবার রাত ১২টায় তিনি ফোন দেন এবং আজকে বাসায় আসেন। আসলে তিনি একজন অফিসার হিসেবে এ কাজ করতে পারেন না। এরপর বাসায় আমি ছিলাম না। ছেলেদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে হয়তো ঘরের কোনো স্থানে আবু রায়হান সাহেব আহত হয়েছেন। তবে কাউকে মারধর করা হয়নি।
হামলার শিকার মো. আবু রায়হান জানান, ওই শিক্ষকের বিয়ে অন্যত্র হওয়ায় সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বুধবার রাতে ওই শিক্ষকের বাবাকে ফোনে বিয়ের প্রস্তাব দেন। মেয়েটির বাবা তাকে বাড়িতে আসার আমন্ত্রণ জানান।
আমিও সেই সময় তার সাথে এসেছি। কথা বলার একপর্যায়ে দুর্বৃত্তরা আমার ওপর হামলা চালায়। আমার মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়েছে। এ সময় সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকেও মারধর করা হয়। কিন্তু তিনি মারধরের বিষয়টি চাপা দেন।
এ প্রসঙ্গে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ জানান, সহকারী শিক্ষিকার সঙ্গে বিয়ের বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রস্তাব দেন। এরপর এ নিয়ে আলোচনা চলছিল। প্রেমের কোনো বিষয় না, মেয়েটা আমাকে একটু ভালোবাসে। সেজন্য তার বাবাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। বাসায় ডেকে এনে আমাদের ওপর হামলা-মারধর করবে- এটা অত্যন্ত দু:খজনক।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাকিল আহমেদ ও গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) ইমরান আল হোসেন। তারা এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এ প্রসঙ্গে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আঞ্জুমান আরা বেগম যগণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানি না। এদিকে হামলার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড় বইছে। বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি একেএম মাজহারুল আনোয়ার ফেরদৌস তার নিজস্ব আইডিতে সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে শাস্তির দাবি জানান। তিনি আরও বলেন, একজন সহকারী কমিশনারের উপস্থিতিতে পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে দুজন অফিসারের ওপর এ হামলা করা হয়েছে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবির পক্ষে সমর্থন জানিয়ে মন্তব্য করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ।
এ ঘটনার বিচার ও শাস্তির দাবিও জানান তিনি। এছাড়াও ঘটনার বিচার দাবি করেছেন বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরাও।