Sunday , November 17 2024
Breaking News
Home / economy / এক নম্বরে ইসলামী ব্যাংক, গ্রাহকদের জন্য বড় সুখবর

এক নম্বরে ইসলামী ব্যাংক, গ্রাহকদের জন্য বড় সুখবর

মানুষের আস্থায় পরিণত হওয়া ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি, সদ্য বিদায়ী সেপ্টেম্বর মাসে আবারও প্রবাসীদের পছন্দের শীর্ষে উঠেছে। দেশের মোট প্রবাসী আয়ের প্রায় ১৭ শতাংশ এসেছে এই ব্যাংকের মাধ্যমে, যা সত্যিই একটি চমকপ্রদ খবর। বাংলাদেশ ব্যাংকের কেন্দ্রীয় প্রতিবেদনের সূত্র ধরে জানা যায়, দেশের ৬০টি ব্যাংকের মাধ্যমে সেপ্টেম্বর মাসে মোট প্রবাসী আয় এসেছে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার।

এই বিশাল অঙ্কের প্রবাসী আয় থেকে দেখা যায়, ৭০ শতাংশ আয়ের উৎস মাত্র দশটি ব্যাংক, যা প্রবাসী আয় প্রেরণে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। ইসলামী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক এবং ঢাকা ব্যাংক—এগুলো হল প্রবাসী আয় প্রেরণে সেরা ব্যাংকগুলো।

গত সেপ্টেম্বর মাসে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ৪০ কোটি ২৭ লাখ ৮০ হাজার ডলার, যা মোট প্রবাসী আয়ের ১৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এ কারণে ব্যাংকটি প্রবাসী আয় প্রেরণে শীর্ষ অবস্থানে উঠে এসেছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অগ্রণী ব্যাংক থেকে এসেছে ৩২ কোটি ২১ লাখ ২০ হাজার ডলার, যা মোট আয়ের ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। তৃতীয় স্থানে থাকা ট্রাস্ট ব্যাংক থেকে এসেছে ২৪ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার, যা মোট আয়ের ১০ দশমিক ২১ শতাংশ।

সাম্প্রতিক সময়ে, প্রবাসীদের আয়ের ক্ষেত্রে কিছু ব্যাংক সম্পূর্ণরূপে পিছিয়ে রয়েছে। যেমন, হাবিব ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অফ পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া—এই সাত ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে কোন প্রবাসী আয় আসেনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা জানিয়েছেন, বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে হুন্ডি বা অবৈধ রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা কমেছে। গত বছরের তুলনায় প্রবাসী আয় বেড়ে যাওয়াও উল্লেখযোগ্য। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৬৫ কোটি তিন লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার প্রবাসী আয় এসেছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৩ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১০ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬২ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ২১ দিনে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১০৭ কোটি ৯৬ লাখ ১০ হাজার ডলার এসেছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য প্রবাসীদের রেমিট্যান্স একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তাদের পাঠানো অর্থ দেশের উন্নয়ন ও মানুষের জীবনযাত্রায় বিশেষ ভূমিকা রাখে। সুতরাং, ইসলামী ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পেলে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বাড়বে।

এদিকে, গত বছরের ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৯ কোটি ১২ লাখ ৬০ হাজার ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় বেশ উন্নত। ফেব্রুয়ারিতে আসে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার, মার্চে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার ডলার এসেছে।

নিশ্চিতভাবেই, ইসলামী ব্যাংক দেশের প্রবাসীদের আস্থা অর্জন করতে পেরেছে এবং এটির সফলতা দেশের অর্থনীতিতে একটি আলোকিত দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। গ্রাহকদের জন্য এই সুখবর শুধুমাত্র ব্যাংকের জন্য নয়, বরং পুরো দেশের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা। আশা করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে প্রবাসী আয় আরও বৃদ্ধি পাবে এবং ইসলামী ব্যাংক তার সেবা ও কার্যক্রমের মাধ্যমে গ্রাহকদের আস্থা আরো বাড়াবে।

About Nasimul Islam

Check Also

দুর্বল ৯ ব্যাংক নিয়ে আতঙ্ক, আপনার ব্যাংক কি এই তালিকায় রয়েছে?

বাংলাদেশের অন্তত নয়টি ব্যাংক বর্তমানে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা সরবরাহ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *