দেশের বিভিন্ন জেলায় চলমান রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন এবং সেই সাথে কোথাও কোথাও চলছে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে দেশের নানা স্থানে দেখা দিচ্ছে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ। ক্ষমতাসীন দল আ.লীগের অনেক নেতাকে মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে যার কারনে আ.লীগ থেকে মনোনয়ন দোয়া প্রার্থীকে পড়তে হচ্ছে প্রতিদ্বন্ধিতায়। যেটা নিয়ে দলের নেতাদের মধ্যে ঐ প্রার্থীর প্রতি সৃষ্টি হয় অসন্তোষের। এই বিষয়টির ফলে আ.লীগে বিদ্রোহী প্রার্থী সৃষ্টি হচ্ছে। তবে এবার একটি ভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটেছে যেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এবার নৌকার মূল নির্বাচনী ক্যাম্প থেকে সরকার পতনের দাবিতে জামায়াত নেতার আহ্বানের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চরবাগডাঙ্গা ইউপিতে নৌকার প্রধান নির্বাচনী ক্যাম্পে নির্বাচনী প্রচারণায় রফিক মোল্লা নামে এক ব্যক্তি সরকার পতনের ডাক দেন। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি ভুলভাবে এই কথা উল্লেখ করলেও বাস্তবে কথাগুলো বলা হয়েছে বর্তমান চেয়ারম্যানের পক্ষে।
৪২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে জামায়াত নেতা রফিক মোল্লাকে হ্যান্ড মাইক নিয়ে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। এসময় তিনি উপস্থিত সবার উদেশ্যে বলেন, আজ আমাদের এক দফা এক দাবি, স্বৈরাচার সরকার তুই কবে যাবি। স্বৈরাচার চেয়াম্যান তুই কবে যাবি। এটা আমাদের শ্লোগান থাকবে। এসময় উপস্থিত মানুষের প্রশ্ন রেখে বলেন, কয় দফা? জিজ্ঞেস করেন তিনি। উপস্থিত মানুষ উচ্চ স্বরে উত্তর দেন ‘এক দফা’।
রফিক মোল্লা আবার বলেন আগামী ৫ জানুয়ারি আমার প্রমাণ করে দিব, আপামর জনতা কৃষক শ্রমিক জনতা, দোকানদার থেকে পানওয়ালা, যুবক-যুবতী, বৃদ্ধা মা-বৃদ্ধ পিতা সবারই একটি কথা, হটাও সন্ত্রাস বাঁচাও দেশ। এদেশে সন্ত্রাস আর কেউ দেখ তে চাই না বলে দিগ-দিগন্তে জন রব উঠেছে। এ বিষয়ে কথা বলতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয় চরবাগডাঙ্গ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ওমর আলী সঙ্গে।
তার প্রধান নির্বাচনী অফিসে বক্তব্য দেয়া ব্যক্তির পরিচয় জানতে চাইলে তিনি জানান, ওই ব্যক্তির নাম রফিক মোল্লা। বর্তমানে সে চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। রফিক মোল্লার রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাইলে তিনি মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তা বন্ধ করে দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রফিক মোল্লা জামায়াত নেতা। বর্তমানে জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধ থাকায় আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য চরবাগডাঙ্গা ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকার পক্ষে কাজ করছেন।
চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিক মোল্লার পরিচয় উল্লেখ করে জামিরুল ইসলাম জানান, তিনি (রফিক মোল্লা) আগে জামায়াতের ভোট করেছে। তবে জামায়তের সংগঠনে তার কোনো পদ নাই। দীর্ঘদিন থেকে তিনি আওয়ামী লীগ করেন।
ভিডিওর বিষয়ে তিনি বলেন, আমার জানা মতে- রফিক মোল্লা সরকারের বিপক্ষে বলেনি। তিনি (রফিক মোল্লা) বর্তমান চেয়াম্যানেকে স্বৈরাচারী বলেছে। কারণ বর্তমান চেয়ারম্যান শাহিদ রানা টিপু এলাকার কোনো উন্নয়ন করেনি। এমনকি মেম্বরদেরও কিছু দেয়নি। এই ক্ষোভ থেকে তিনি (রফিক মোল্লা) কথাগুলো বলেছেন। তবে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেছে সেটা আমার জানা নেই।
উল্লেখ্য, বর্তমান সময়ে এমনটিও দেখা গেছে, অনেক নেতা অন্য কোনো দল থেকে ক্ষমতাসীন দলে আশ্রয় নিয়েছে সুবিধা পাওয়ার জন্য কিন্তু তাদের ভেতরকার যে নিজস্ব দলের প্রতি যে টান সেটা মন থেকে দূর রতে পারেনি। যেটা কখনও কখনও তাদের কথায় উঠে আসে। তবে সেটা তাদের অনিচ্ছায় ঘটে থাকে। যেহেতু তিনি েকজন জামায়াত প্রার্থী তাই তার অজান্তেই মনের ভেতরের বিষয়টি উঠে এসেছে এমনটি বলছেন স্থানীয় কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি। তবে বিষয়টি নিয়ে ঐ এলাকায় আলোচনা সমালোচনা চলছে।