বাংলাদেশের তিনটি জেলার অনেক মানুষ এখন বন্যার কারনে ক্ষতিগ্রস্থ। তবে সবরা কথা আলাদা আলাদা বলা সম্ভব নয় । এই অবস্থায় অনেক মানুষ তাদের স্বজনদের হারিয়েছেন। অনেকে হয়েছেন নিশ্ব। তদেরই একজন কোমর আলীর বয়স ৬৫ বছর। এমন ভয়ঙ্কর বন্যা তিনি জীবনে দেখেননি। বললেন, ‘জীবনে এই জল দেখিনি! এক ঝাপটায় বন্যার পানি এসে সব মাছ দিয়ে গেল! কাপড়, তোষক, বালিশসহ কিছু জিনিস বাঁচাতে পেরেছি। ডেক-ডেক, থালা-বাসন ভেসে উঠেছে। সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি! ‘
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার আফজালাবাদ বাজারে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন কোমর আলী ও তার পরিবার। দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে আলাদা থাকে। দুই মেয়েকে বিয়ে করেন। এখন পরিবারে স্ত্রী, ১ ছেলে, ২ মেয়েসহ ১০ জন। ছোট ছেলে চিত্রশিল্পী। মূলত, পরিবার তার নিজের মতই চলে। ছেলেটি যে দোকানে কাজ করে সেটিও ডুবে গেছে। তাই কাজ বন্ধ, আয় নেই।
সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ঘর থেকে পানি নেমে গেলেও কোমর আলীর বাড়ির সামনে হাঁটু পর্যন্ত পানি রয়েছে। ঘরের ভেতরে কয়েক ইঞ্চি কাদা আছে। স্তূপে পড়ে আছে নানা ধরনের আবর্জনা। পুরো বাড়িটি ধ্বংসস্তূপে। কোমর আলী ও তার স্ত্রী রেবেকা বেগম (৫১) ঘর পরিষ্কার করছিলেন।
রেবেকা বেগম বলেন, ‘ঘরে কোমর পানি ছিল। কয়েকদিন ধরে যাযাবর জীবন যাপন করছি। এখন আপনি কিভাবে ঘর পরিষ্কার করতে জানেন! হাড় ব্যাথা করছে। বন্যার পানিতে ক্ষতি হচ্ছে, বেড়েছে কাজ। কেমন করে কাদামাটি সরিয়ে ঘর পরিষ্কার করব, তাতে আমার মাথা ঘুরছে। ‘
কোমর আলী বলেন, আমি অসুস্থ। ছেলের আয় বন্ধ। অনেক কিছু হারিয়ে গেছে, হারিয়ে গেছে। গৃহস্থালির খরচও বাড়ছে। ঋণের বোঝা বাড়ছে। সরকারের কাছ থেকে কোনো ত্রাণ বা সহায়তা পাইনি। পরের দিন কিলায় যাবো, ভাবতে ভাবতে পথভ্রষ্ট হয়েছি।
সারাদেশ থেকে এই তিনটি জেলায় ত্রান সমর্ঘী বিতরন চলছে। তবে সেই ত্রান জতেষ্ঠ নয় বলেও জানিয়েছে অনেক ভুক্তভোগী। এছাড়া অনেকের কাছে এখনো পর্যন্ত কোন সাহায্য পৌছায়নি।