বগুড়া জেলা কারাগারে মাত্র ২৯ দিনের ব্যবধানে চারজন আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চারজনই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তবে এই মৃত্যুগুলোর প্রকৃত কারণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার কর্মীরা।
বগুড়া কারাগারের জেল সুপার জানিয়েছেন, মৃত্যুগুলোর পেছনে কোনো অস্বাভাবিকতা নেই। তিনি উল্লেখ করেন, তার আগের কর্মস্থল নওগাঁয়ও এক সপ্তাহে ৭ জন বন্দির মৃত্যু হয়েছিল।
জাতীয় গুম কমিশনের সদস্য ও মানবাধিকার কর্মী নূর খান এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে (১০ ডিসেম্বর) ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে মারা যাওয়া নেতাদের পরিবারের বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
শহিদুল ইসলাম ওরফে রতনের স্ত্রী শাহিদা বেগম বলেন, “আমার মনে হয় তাদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তা না হলে এত অল্প সময়ে এতগুলো মানুষ মারা যাবে কেন?”
সর্বশেষ, সোমবার সকালে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও দুর্গাহাটা ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মতিন ওরফে মিঠু (৬৫)। গত ২৪ আগস্ট তাকে আটক করা হয়। রবিবার রাতে অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালের সিসিইউতে নেওয়া হয়। তবে সোমবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
মৃত আব্দুল মতিনের ভাতিজা শান্ত হোসেন জানান, “আমার চাচার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যুর বিষয়ে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই।”
গত ১১ নভেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বগুড়া কারাগারে বন্দি থাকা চারজন আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ২৬ নভেম্বর মারা যান বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক অধ্যক্ষ শাহাদত আলম ওরফে ঝুনু (৫৭)। একদিন আগে, ২৫ নভেম্বর মারা যান শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুল লতিফ (৬৭)। আর ১১ নভেম্বর মারা যান বগুড়া পৌর আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম (৫৮)।
এই মৃত্যুগুলোকে ঘিরে কারাগারে বন্দিদের নিরাপত্তা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।