টানা গত দেড় দশক সময় ধরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় ধীরে ধীরে উন্নয়নের শেখরে পৌঁছে যাচ্ছে বাংলাদেশ, আর এমনটা মনে করছেন সকলেই। আর এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে দলকে আরো এগিয়ে নিতে সকল নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যেহেতু জনগণের সংগঠন, সাজেদা চৌধুরীর মতো অনেক নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মী এ সংগঠনের লাগাম টেনে ধরেছেন, তাই কঠিন সময়েও এ সংগঠন তার দিক হারায়নি। নীতি আদর্শ নিয়ে এগিয়েছে। আশা করি, প্রয়াত নেতাদের আদর্শকে সামনে রেখে আমাদের নেতারা এগিয়ে যাবেন, এটাই চাই। সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেত্রী মরহুম সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এবং সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য শেখ অনি রহমানের ওপর আনা শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগে সাজেদা চৌধুরীর অবদান ভুলে গেলে চলবে না বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, চরম প্রতিকূলতার মধ্যে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজটি তিনি করেছেন। এই আওয়ামী লীগকে বারবার আঘাত করেছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামী লীগের ওপর আঘাত এসেছে। সাজেদা চৌধুরী নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করেছেন। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ক্যাম্পের নেতৃত্বে ছিলেন যেমন, তেমন মুক্তিযোদ্ধাদেরও সংগঠিত করেছেন, খোঁজখবর নিয়েছেন
তিনি আরও বলেন, ১৫ আগস্টের পর আমাদের আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন নেমে আসে। সাজিদ চৌধুরীও ভুক্তভোগী। জিয়াউর রহমান তাকে গ্রেফতার করেন। তার অপারেশন হয়েছে, তার জ্বর হয়েছে- এই অবস্থায় জিয়াউর রহমান তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠান। মতিয়া চৌধুরীকেও গ্রেফতার করা হয়। তিনি অসুস্থও ছিলেন। এমনকি তারা তাদের বিভাগও দেয়নি। সাধারণ বন্দীর মতো জেলে ঢোকে। সাজেদা চৌধুরী এদেশের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামের অগ্রভাগে ছিলেন। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি আমার সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি যান। আমরা তাকে ফুপু বলে ডাকতাম।
প্রয়াত নেতাদের স্মরণ করতে গিয়ে উপপ্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, একে একে সবাই চলে যাচ্ছেন। বয়স হয়েছে, যেতে হবে. হয়তো একদিন আমিও চলে যাবো। কিন্তু তিনি যা করেছেন তা আমাদের মনে রাখতে হবে। আমাদের আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী জিয়াউর রহমানের নির্যাতনের শিকার। শুধু আওয়ামী লীগ কেন, আমাদের বিরোধী দলের নেতা যারা রওশন এরশাদ, জেনারেল এরশাদ, আনোয়ার হোসেন মঞ্জুসহ অন্যরা নির্যাতনের শিকার? তিনি আরও বলেন, সাজেদা চৌধুরী বা মতিয়া চৌধুরীকে গ্রেফতার করে জিয়াউর রহমান ডিভিশন না দিয়েই চলে যান। খালেদা জিয়া ঠিক একই কাজ করেছেন। রওশন এরশাদ, তিনি তো মাস্টার্স ডিগ্রি পাশ। পেনাল কোডে আছে মাস্টার ডিগ্রি পাশ হলে ডিভিশন দিতে হয়। তাকে সাধারণ কয়েদিদের কাছে রেখে দেওয়া হয়। সাধারণ বন্দীদের সাথে। এমনকি আমরা নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করেছি এবং অসুস্থ থাকায় তাকে বাড়িতে থাকতে দিয়েছি। মানুষের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি একটি বৃদ্ধ মানুষের কাজ। কিন্তু খালেদা জিয়া তা করেননি।
কিন্তু আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসার পর চাইলেই এর প্রতিশোধ নিতে পারতেন, কিন্তু তা করেননি। উল্টো তাদের প্রতি আরো দোয়া দেখিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।