বিএনপি চেয়ারপারসনের শ্বাসকষ্ট জানিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাকে বাঁচাতে হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত বিদেশে নিতে হবে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। রোববার মধ্যরাতে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) অক্সিজেন নিয়ে তা সমাধানের চেষ্টা করা হয়।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়াকে বাঁচাতে এখন উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসকরা বলছেন, দেশে ভালো চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়। আমরা অনেক দিন ধরেই তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আসছি। কিন্তু সরকার কর্ণপাত করছে না।
খালেদা জিয়ার অবস্থা গুরুতর উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন একেবারে শেষ সময় চলে এসেছে। অবিলম্বে তাকে বিদেশে নিয়ে যেতে হবে, না হলে তাকে বাঁচানো যাবে না। যদিও কিছুক্ষণ আগে তাকে সিসিইউ থেকে কেবিনে আনা হয়েছিল। স্বস্তির কোনো কারণ নেই, একে স্থিতিশীলও বলা যায় না। তার শারীরিক অবস্থা উঠানামা করছে।
গতকাল রাতে হঠাৎ করেই শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন খালেদা জিয়া। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোববার রাত দেড়টার দিকে তাকে কেবিন থেকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়। সোমবার বেলা ১১টার পর তাকে কেবিনে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে নেওয়া হয়।
৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, বাত, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন।
গত ৯ আগস্ট থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া।
এর আগে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় খালেদা জিয়াকে ১০ জুন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
গত বছরের ১০ জুন রাতে বুকে ব্যথা নিয়ে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের অধীনে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। দ্রুত এনজিওগ্রাম করার পর তার হার্টে রিং বসানো হয়। দুটি হার্ট ব্লক এখনও রয়ে গেছে।
এর আগে, ২৭ ফেব্রুয়ারি তিনি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। গত বছরের ২২ আগস্টও তিনি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হাসপাতালে যান। এক সপ্তাহ পর ২৮ আগস্ট তাকে আবার হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে ভর্তি করা হয়। দুই দিন হাসপাতালে থাকার পর ৩১ আগস্ট দেশে ফেরেন খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে কারাগারে গিয়েছিলেন। দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাকে নির্বাহী আদেশে ‘সাময়িক মুক্তি’ দেয় সরকার। এর পর কয়েক দফা তার দণ্ডাদেশ স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়।