বাংলাদেশের দুইটি বড় দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি । তবে সম্পর্কটা অনেকটা কাদা-কুমড়োর মত। কেউ যেন কখনোই ভাবতে পারেনা দুই দলের কর্মীরা একসাথে বসে কোন অনুষ্ঠান উদযাপন করবে। এমন যদি হতো তাহলে হয়তো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি টা আরো বেশি বজায় থাকত বাংলাদেশে। তবে এবার বাংলাদেশে এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে যেটা মানুষের কল্পনার বাইরে। সম্প্রতি সিলেটে বড়দিন উপলক্ষে বিএনপি এবং আম্লীগের কর্মকর্তারা একসাথে কেক কেটেছে।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে দেশের উন্নয়নে সকলকে এক যোগে কাজ করার প্রার্থনার মধ্য দিয়ে সিলেটে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রধান উৎসব বড়দিন উদযাপিত হচ্ছে।
বড়দিন উপলক্ষে শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় নগরীর নয়াসড়ক সিলেট প্রেসবিটারিয়ান চার্চে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রার্থনা পরিচালনা করেন ফাদার ডিকো নিঝুম সাঙ্গমা। এদিন একসঙ্গে কেক কাটেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা।
করোনা পরিস্থিতির কারণে গেলো বছরের বড়দিন সংক্ষিপ্ত পরিসর আয়োজন করা হয়েছিল। এবারের বড়দিন উপলক্ষে সিলেট কেন্দ্রীয় গির্জাকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। শিশু-নারী-পুরুষেরা নতুন সাজে সেজেছে। এই উৎসবে সামিল হলেন সিলেটের রাজনৈতিক নেতারা।
সিলেট প্রেসবিটারিয়ান চার্চে আনুষ্ঠানিকভাবে কেক কেটে বড়দিন উদযাপন করা হয়। কেক কাটা অনুষ্ঠানে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সিলেটে দায়িত্বরত ভারতের সহকারী হাইকমিশনার নিরাজকুমার জসওয়াল, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ব্রায়ান বঙ্কিম হালদার, সিসিক কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান আহমদ শিপলু, উপ-দপ্তর সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী, চার্চের কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি ডিকন নিঝুম সাংমা, রেভা. ফিলিপ বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে রাজনীতির প্রেক্ষাপটে এটা খুবই বিরল একটা দৃশ্য। খুবই মনোরম সেইসাথে। এমন সম্প্রীতি যদি প্রতিটা জেলায় থাকতো তাহলে হয়তো সহিংসতার নামগন্ধও বাংলাদেশে থাকতনা। উভয় দলের নেতাকর্মীরাই খুশি একসাথে অনুষ্ঠান উদযাপন করে। এ ঘটনা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে আরো একধাপ মজবুত করে দিল।