জীবনে চলার পথে কখনো না কখনো বড় কোনো দুর্ঘটনা মুখে পড়তে হয়েছে কাউকে না কাউকে। ফলে কেউ হারিয়েছেন প্রাণ, আবার সৌভাগ্যবসত বেঁচে ফিরতে পেরেছেন কেউ কেউ। আর তাদের মধ্যে একজন ক্ষমতাসীন দলের পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এবার সবার উদ্দেশ্যে সেই ঘটনা নিজেই খুলে বললেন তিনি।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান একবার ১৯৬৬ সালে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় জড়িত ছিলেন। হেলিকপ্টারে পাইলটসহ মোট ২৪ জন ছিলেন। এর মধ্যে ২৩ জন দুর্ঘটনায় মারা যান। দুর্ঘটনার কথা স্মরণ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনায় আমিই একমাত্র বেঁচে ছিলাম। আমি শুধু আল্লাহকে ডাকছিলাম আর মায়ের কথা ভাবছিলাম।
শনিবার (১১ জুন) রাজধানীর হোটেল লেকশোরে জাতীয় নীতি সংলাপে অংশ নিয়ে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সেদিন ছিল ১৯৬৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বুধবার। সে সময় আমি আমেরিকান সাহায্য সংস্থা কেয়ারের ঢাকা অফিসে কর্মরত ছিলাম। আমাকে ফরিদপুর ও কুষ্টিয়া পাঠানো হয়েছে। পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স তখন কিছু হেলিকপ্টার সার্ভিস চালু করে, যা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের কিছু অংশে যাত্রীদের নিয়ে যেত। দুপুর দুইটার দিকে হেলিকপ্টারে উঠলাম কুষ্টিয়া যাওয়ার জন্য। ওই হেলিকপ্টারে ২৪ জন ছিলেন। হেলিকপ্টারটি ঢাকা থেকে প্রথমে ফরিদপুর ও পরে কুষ্টিয়া যাওয়ার কথা ছিল। হেলিকপ্টারটি ফরিদপুরের কাছে অবতরণ করলে উপর থেকে বিকট শব্দ শোনা যায়।
তিনি বলেন, হেলিকপ্টারটি মুহূর্তের মধ্যে মাটিতে বিধ্বস্ত হয়। আমি শুধু আল্লাহকে ডাকছিলাম আর মায়ের কথা ভাবছিলাম। মাটিতে পড়ে যাওয়ার পর হেলিকপ্টারে প্রচণ্ড ধোঁয়া তৈরি হয়। বেঁচে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করছি। এই জীবনে কিছু পাওয়ার নেই। মানুষের জন্য কাজ করতে চান।
তার রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে বিশদভাবে মন্ত্রী বলেন, “আমি একটি নিম্ন আয়ের পরিবার থেকে এসেছি, আশি গ্রামের ছেলে।” জীবনের স্বার্থে ব্যবসা করেছি, চাকরি পেয়েছি। গ্রামের মানুষের দুর্দশা বুঝতে, হাওরের সন্তান হিসেবে এ অঞ্চলের মানুষের দুর্দশা আমাকে পীড়া দেয়। এরপর গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের কল্যাণে ভোট চেয়েছি। আমি বড় পরিবারের সন্তান নই। তখন ছাত্রলীগ-যুবলীগ কেউ আমাকে চিনত না। আমি সবাইকে বললাম আমাকে ভোট দেন ভাগবাঁটোয়ারা করে কিছু করবো না। আমি আপনার কল্যাণে কাজ করব। সবাই আমাকে বিশ্বাস করেছিল। টানা তিনবার জিতেছি। গ্রামের মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন সময়ে নানা হাস্যকর বক্তব্য দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেনদের সমালোচনার শিকার হন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তবে এতে কান না দিয়ে নিজের মতো করে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।