কুমিল্লার পর এবার নড়াইল। সাম্প্রদায়িক হা/ মলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। আর আমরা, এদেশের সরকার, প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা দেখছি বলে মনে হয়। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ কষ্ট পাচ্ছে; কিন্তু কিছু বলতে পারছেন না? তাদের একটাই ইচ্ছা। কেন আমরা বারবার আক্রান্ত হচ্ছি? প্রতিকার পাব না। অপরাধ ঘটবে কিন্তু অপরাধ মুক্ত থাকবে না।
পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নড়াইলের পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও লোহাগড়া উপজেলার ইউএনও সারারাত সেখানে অবস্থান করেন। নিরাপত্তার জন্য বিপুল সংখ্যক র্যাব-পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে। এত কিছুর পরও কীভাবে লোহাগড়ের দিঘলিয়ায় বিপুল সংখ্যক বাড়িতে হা/ মলা, ভাং/ চুর ও আ/ গুন দেওয়া হল? তাহলে যারা হা/ মলা করেছে, তারা কি পুলিশ ও প্রশাসনের চেয়ে শক্তিশালী?
ব্লাসফেমি বা কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা অবশ্যই অপরাধ। কেউ অপরাধ করলে তাকে আইনের আওতায় আনার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু কারো বাড়িঘর ভা/ ঙচুর হবে কেন? আ/ গুন দেওয়া হবে কেন?
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে দীপালি সাহা জানান, একদল লোক তাদের বাড়ি থেকে সর্বস্ব লুট করার পর আরেক দল এসে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। বাড়িতে আগুন লাগলে ৬২ বছর বয়সী দীপালি রানী সাহা ও তার ছেলে গোবিন্দ পাশের অন্য ঘরে বিছানায় লুকিয়ে ছিলেন।
এক সংবাদ মাধ্যমের কর্মীকে খবরে বলা হয়, পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নড়াইলে সাম্প্রদায়িক হা/ মলায় ভুক্তভোগিদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা তার যোগাযোগ মাধ্যমে যে বার্তা দিয়েছেন তা মর্মস্পর্শী। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমি কখনই ভাবতে পারি না যে আমরা নিজেদেরকে আলাদা করে ফেলব। এই নড়াইলকে আমি চিনি না। গতকাল আমাদের এলাকায় একটি ঘটনা ঘটেছে, যা আমাকে অনেক হতবাক করেছে এবং প্রতি মুহূর্তে আমাকে কষ্ট দিচ্ছে।
বার্তায় মাশরাফি আরও বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে যে নড়াইল দেখে এসেছি, যে নড়াইল নিয়ে আমরা গর্বিত, আমি এই নড়াইলের সঙ্গেই আছি। মেলাতে পারছি না দেশের আইন আছে, প্রশাসন আছে, তারা ব্যবস্থা নেবে। কোনো অবস্থাতেই আমরা আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারি না। অভিযোগ সত্য হলেও একজন ব্যক্তির জন্য গোটা সমাজের নিরীহ মানুষের ওপর অন্যায় করার অধিকার কারো নেই। কেউ সত্যিকারের অপরাধ করলে আদালত তার বিচার করবে, কিন্তু আমি-আপনি এর জন্য কাউকে শাস্তি দিতে পারবেন না।