আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টি (জাপা) অংশ নেবে বা কার সঙ্গে জোট করবে তা জানতে আরও সময় লাগবে। ভিতরে অনেক খবর আছে। আমাদের আরও কিছু খবরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) রাতে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তফসিল ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সংলাপ, বিএনপির আন্দোলন ও নিজেদের নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়েও কথা বলেন তিনি।
নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টির অবস্থান নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতীয় পার্টি নির্বাচনে আসবে কি না, কে কার সঙ্গে যাবে, সেটা তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়। জাতীয় পাটির বিষয়ে শেষ কথা শুনতে আরও সময় লাগবে। একটু অপেক্ষা করুন, ভেতরের অনেক খবর আছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু-এর চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, মিঃ লু চিঠি দিয়েছেন, চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আমাদের বক্তব্য জানাব। কিন্তু এটা নিয়ে আমাদের এত ভাবার দরকার নেই।
বিএনপির তফসিল প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যে ট্রেন ছেড়েছে তা থামানোর ক্ষমতা তাদের নেই। তবে তারা ওই ট্রেনে না উঠলে আমরা কী করব? নির্বাচনী ট্রেন কারও জন্য অপেক্ষা করে না। ট্রেন ছাড়লে তো আর থামে না। থেমে থাকবে না। নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হচ্ছে, আমাদের এর বিকল্প কী করার আছে?
আন্তঃদলীয় সংলাপের বিষয়ে সিইসির প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন সামনে, তফসিল ঘোষণা হয়ে গেছে। এই সময়ে কবে আপনি বাংলাদেশের শতাধিক দলের সঙ্গে সংলাপ করবেন? কবে নির্বাচন করবেন? ডোনাল্ড লু’র আর সিইসির সংলাপের কথা এক নয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা বিশ্বাস করি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক চর্চায় সংলাপ অপরিহার্য। সংলাপের বাস্তবতা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। বাংলাদেশে আমাদের সংলাপ হয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদারতা ও সংলাপ করেছেন। বিএনপির সঙ্গে দুবার সংলাপ করেছেন। রাষ্ট্রপতি ফোন করলেও তারা আসেননি। নির্বাচন কমিশন ফোন করলেও তারা আসেনি। একপক্ষ চাইলে সংলাপ হবে না। সবাইকে চাইতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। গণতন্ত্রপ্রেমী বাঙালির জন্য আজ একটি অত্যন্ত আনন্দের ও ঐতিহাসিক দিন। এটি জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটায়। জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সিইসির এই তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানাই। দেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও চলমান অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচনের বিকল্প নেই।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্ত ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেওয়ার জন্য দেশের সকল ভোটারদের প্রতি অনুরোধ জানান ওবায়দুল কাদের।
তিনি জানান, আগামী ১৭ নভেম্বর ঢাকা জেলা কার্যালয়ে জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে মনোনয়ন ফরম বিক্রির উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর পরপরই ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা যাবে।
এদিকে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, তফসিল ঘোষণার পর এটি আমাদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।