সম্প্রতি চলচ্চিত্রশিল্পী সমিতির নির্বাচন ঘিরে বিতর্কের শেষ নাই। ঘটনা এবার রূপ নিয়েছে ভিন্ন পর্যায়ে। গুঞ্জন রটেছে শিল্পী সমিতির তিন কিংবদন্তি অভিনেতাদের ছবি নাকি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ইলিয়াস কাঞ্চন সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসে থাকা অবস্থায় এমনটি কেন হলো, এ ব্যাপারে সমালোচনা করেছেন অনেক অভিনেতারা।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরপরই ঢাকা চলচ্চিত্রের তিন কিংবদন্তি অভিনেতা সোহেল রানা, ফারুক ও উজ্জ্বলের ছবি তার কার্যালয় থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়েছে। সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসে ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণ কেন এমন করলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক তারকাই।
কোনো কোনো গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশ হলে তার সমালোচনাও করেন অভিনেতা রুবেল। তবে পুরো বিষয়টি তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বলে দাবি করেছেন সমিতির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার। তিন কিংবদন্তীর ছবি সরিয়ে ফেলার খবরকে মিথ্যা বলে মন্তব্য করেন এই অভিনেত্রী। বুধবার সাংবাদিকদের নিপুণ বলেন, “মিথ্যা ছড়ানো হচ্ছে, যা বানোয়াট।
ফারুক, সোহেল রানা ও উজ্জ্বল ভাইয়ের ছবি সরানো হয়নি। তারা আমাদের রোল মডেল। আমাদের কিংবদন্তি। আমাদের মাথার মুকুটে তিনজন। আপনারা কি? তাদের ছবি সরানোর কোনো কারণ বা যুক্তি আছে? কার মাথায় এসব নেতিবাচক চিন্তা আসে জানি না।’ তবে কেন এমন গুঞ্জন?নিপুণ বলেন, ‘ছবি সরানোর প্রশ্নই আসে না। তাদের ছবির গ্লাস ভেঙে গেছে। যা মেরামত করা হয়েছে। আর এটা করা হয়েছে আমাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে এবং খরচে। কিন্তু ছড়িয়ে পড়া তিনটি ছবি আমরা সরিয়ে দিয়েছি। ছবিটি সংস্কার করে আবার নির্ধারিত স্থানে নামফলক বসানো হয়েছে। নিপুন তিনি আরও বলেন, ‘তারা সম্মানের জায়গায় ছিলেন, থাকবে চিরকাল।
আমরা ভাবছি কেন শুধু এই তিনজন, নায়করাজ রাজ্জাক, আলমগীর, আহমেদ শরীফ, খলিলসহ আরও অনেক কিংবদন্তিকে তাদের সঙ্গে রাখা হবে। শিল্পী সমিতি ১৯৮৪ সালে নায়ক সোহেল রানার প্রস্তাবে। শিল্পী সমিতি গঠন করেন ফারুক। এই তিনজনের উদ্যোগে গঠিত শিল্পী সমিতির প্রথম সভাপতি হন নায়করাজ রাজ্জাক। সে সময় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আহমদ শরীফ। উদ্যোক্তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সমিতির কার্যালয়ের দেয়ালে সোহেল-ফারুক-উজ্জলের ছবি টাঙিয়ে দেন মিশা-জায়েদের কার্যনির্বাহী পরিষদ।
কিংবদন্তীরা লাখো দর্শকের মনে ছিলেন, আছেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন। শিল্পী সমিতির যদি তাদের প্রাপ্য সন্মান না দিতে পারে সেটা শিল্পী সমিতির ব্যর্থতা। তাদের হাতেই তৈরি হয়েছিল শিল্প সমিতি, ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে যদি আজ শিল্পী সমিতি থেকে তাদের ছবি সরে যায়, এ ব্যর্থতা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের।