বাংলাদেশের একটি বাহিনীর বিশেষ বাহিনী ‘র্যাব’ এর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে গুরুত্ব দেয়া হয় এবং নিষেধাজ্ঞা যাতে করে তুলে নেয় যুক্তরাষ্ট্র সে জন্য চেষ্টা করে সরকার। এদিকে বাংলাদেশের ওপর নতুন করে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে কিনা সে বিষয়ে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে সাংবাদিকরা। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা এমন ধরনের প্রশ্ন করেন। এ বিষয়ে জবাব দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
যুক্তরাষ্ট্র হাজার হাজার নিষেধাজ্ঞা জারি করে থাকে। তাদের নিষেধাজ্ঞায় আমাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, “মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এক দিকে আসে এবং অন্য দিকে যায়।” মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে (বিআইআইএসএস) এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকরা জানতে চান, শাহীনবাগে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নতুন নিষেধাজ্ঞা বা দুই দেশের সম্পর্কের কোনো অবনতি হচ্ছে কি না? এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। যুক্তরাষ্ট্র হাজার হাজার নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে।
ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার আগে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আপনাদের এটা হয়তো মনে আছে, মোদির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ‘ভালো’ জানিয়ে মোমেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক বজায় রয়েছে। তাদের সাথে আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগাযোগ আছে। এই বছরে আমরা প্রায় ১৬টি মিটিং করেছি। এদিক থেকে আটটা, তাদের দিক থেকে আটটা। আমাদের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকায় তারা বিভিন্ন পরামর্শ দেন।
বাংলাদেশে মার্কিন নাগরিকদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, ‘সেটা ওদের দায়দায়িত্ব এড়ানোর জন্য। কারণ তাদের লোকজন এলে কেউ আহ”ত হলে তারা (দূতাবাস) দায় নিতে চায় না।’
উল্লেখ্য, গত ১৪ ডিসেম্বর সকালে নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাসায় যান মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। সকাল ৯টা ৫ মিনিটে তিনি সুমনের বাড়িতে প্রবেশ করেন। সেখানে তিনি প্রায় ২৫ মিনিট অবস্থান করেন। তারপর বাড়িটি ত্যাগ করেন।
এ সময় ‘মায়ের কান্না’ নামের একটি সংগঠন ৪৫ বছর আগের গুম এবং সামরিক শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে রাষ্ট্রদূতকে স্মারকলিপি দেয়। এ সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে ঘিরে ধরে বিভিন্ন বিষয়ে জানানোর জন্য। কিন্তু পরিস্থিতি অন্যদিকে যেতে পারে এমনটা মনে করে তার প্রটোকলে থাকা ব্যক্তিরা, তাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যান। এই ঘটনার পর পিটার হাস ঐদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে একটি জরুরি বৈঠকে করেন। সেখানে তিনি তার নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার নিরাপত্তা ওপর গুরুত্ব দেওয়ার কথাও বলেন।